নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সম্পত্তির জেরে বাবাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে সন্তানরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পিতা আব্দুর রহিম বাদী হয়ে সন্তানদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছেলে জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়াচর এলাকায় নিজের বাবাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনা ঘটে।
৭০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রহিমকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করে তারই ছেলে জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার।
মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সে ভিডিওতে দেখা যায়, আব্দুর রহিমের দুই ছেলে ও এক মেয়ে তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে মারধর করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আষাঢ়িয়াচর গ্রামের আব্দুর রহিম প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ে করার পর থেকে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। সম্প্রতি আব্দুর রহিম তাদের বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। রোববার দুপুরে বাবার কাছে বাড়ির বিক্রির কারণ জানতে চান তারা।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ছেলে জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার বাড়ির সামনে বাবাকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় আহত আব্দুর রহিমের ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে তার ছেলেমেয়েরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, তাদের গ্রামে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা এই প্রথম। এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাবাসী হিসেবে আমরা লজ্জিত। ওদের বিচার হওয়া উচিত।
অভিযুক্ত ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, তাদের বাড়ি বাবা বিক্রি করে দিতে চান। এ বাড়ি বিক্রি করে দিলে তাদের বসবাসের কোনো স্থান থাকবে না। বাড়িটি বিক্রি না করার জন্য তার বাবাকে অনুরোধ করেন। অনুরোধ না শোনার কারণে রাগের বশে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। এভাবে মারধরের জন্য তারা অনুতপ্ত।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, সন্তানদের জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবাকে কুপিয়ে জখম করায় ছেলে জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন