ঢাকার ধামরাইয়ে আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডের এক ডিস্ট্রিবিউটরের গোডাউনে লুটের ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ৪ মিনিটের ওই ঘটনায় ১৫ লাখ টাকার মালামালসহ নগদ ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
রোববার (০৪ মে) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে ২টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত উপজেলার সদর ইউনিয়নের শরিফবাগ বাজারে আবুল খায়ের টোব্যাকোর ডিস্ট্রিবিউটর মুহাম্মদ নাসিমের গোডাউনে এই লুটের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে একটি পিকআপসহ ১০-১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত গোডাউনের সামনে এসে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মালামাল বের করে পিকআপে লোড করতে থাকে। একপর্যায়ে এলাকাবাসী এসে ধাওয়া দিলে ২টা ১৪ মিনিটের দিকে তারা পিকআপসহ পালিয়ে যায়।
ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে একটি পিকআপ ভ্যান এসে থামে ওই গোডাউন মার্কেটের সামনে। এরপর গাড়ি থেকে প্রথমে লাল শার্ট ও লুঙ্গি পরিহিত একজন ও পরে আরেকজন নামেন। এরপর ২টা ১০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের দিকে দেখা যায়, অন্তত ৬-৭ জন দুর্বৃত্ত গোডাউনের সামনে এসে দোকানের শাটারের তালা ভাঙছেন। শাটার ভাঙার পর একের পর এক কার্টুন বের করতে থাকেন তারা। প্রায় এক মিনিট পর লাইট হাতে একজন ও আরেকজন নিরাপত্তারক্ষীকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। একই সময়ে দুজন ব্যক্তি দ্রুত পিকআপে কার্টুন লোড করতে থাকেন।
একপর্যায়ে ২টা ১৪ মিনিটে এলাকাবাসী ওই পিকআপের দিকে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়। এসময় পিকআপে বিভিন্ন বয়সের অন্তত নয়জন দুর্বৃত্তকে উঠতে দেখা যায়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মুহাম্মদ নাসিম বলেন, আমাকে আমার এলাকার এক বন্ধু ফোন করে বলে, তোমার গোডাউনে মাল চুরি হয়ছে। ওরা উপস্থিত ছিল। গোডাউনে এসে দেখলাম, ৩০ পিস মাল গেছে। যার মূল্য ১৫ লাখ টাকার বেশি। আর ক্যাশে টাকা ছিল ৫ লাখ ৩২ হাজার ৯৩২ টাকা। এগুলো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২টা ১০ মিনিটের দিকে ঢুকে তারা। তাদের শনাক্ত করতে পারিনি। থানা থেকে পরিদর্শন করেছে। তারা থানায় যেতে বলেছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, ওখানে চুরি হয়েছে। ওই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ধামরাইয়ে ডাকাতি-চুরি যেন থামছেই না
গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের আমছিমুর এলাকায় গেদু মিয়া নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তালা ভেঙে ঢুকে অন্তত ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া গত ২৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের বাথুলি-বালিথা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ওপর ট্রাক থামিয়ে চালক-হেলপারকে আটকে মারধর করে ৩০ লাখ টাকার পামওয়েল তেলসহ ট্রাক লুটের ঘটনা ঘটে।
আগের দিন ২৭ এপ্রিল রাতে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই উত্তর পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে মফিজ উদ্দিন (৭৫) নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অন্তত ১ লাখ নগদ টাকাসহ ১০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এছাড়া গত ৩১ মার্চ নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকওয়া ফুড প্রোডাক্ট নামে একটি কারখানায় ডাকাতির ঘটনায় মালামাল ও নগদ টাকাসহ ১৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র লুট করে ডাকাতরা।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়। তেলসহ ট্রাক লুটের ঘটনায় ট্রাকটি উদ্ধার হয়েছে। আসামি ধরার চেষ্টা চলছে। ফুডের ঘটনায় মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। একটা ঘটনা যখন ঘটে, সেটি তুলে ধরা হয়, কিন্তু উদ্ধার হলে সেটা সেভাবে সামনে আসে না।
মন্তব্য করুন