মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অনলাইন জুয়ার শীর্ষ ১৯ এজেন্টদের গতিবিধি নজরদারি করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। ওই জুয়া এজেন্টদের তালিকা ধরে তাদের আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার নেপথ্য কারণ এবং অবৈধ সম্পদের বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছে সংস্থাটির অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিট। জেলা পুলিশ ও সিআইডি সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দৈনিক কালবেলায় ‘অনলাইন জুয়া : রাজধানী মেহেরপুর, হেডকোয়ার্টার রাশিয়া’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর এ নিয়ে মেহেরপুরে হৈ চৈ শুরু হয়। এরপর গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে মেহেরপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেই তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম বিভাগ মেহেরপুরের অনলাইন জুয়ার এজেন্টদের মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
কালবেলায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে ‘ওয়ান এক্স বেট’ এবং ‘মেলবেটের’ প্রায় ৩০টি এজেন্ট চ্যানেলের নাম আসে। এরপর এসব জুয়া সাইট বন্ধ রয়েছে।
তদন্তের সূত্র জানায়, মেহেরপুরের অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মুরশিদ আলম লিপু (২৮), কোমরপুর গ্রামের ময়নুদ্দিন ওরফে ময়না মেম্বার (৩৭), শামীম রেজা (২৬) ও মুকুল ইসলাম (২৮), রাজু আহম্মেদ (১৯) ওরফে রাজন, ইমদাদুল হক ওরফে ইন্তা, প্রসেনজিৎ হালদার (২৫), আফসার মণ্ডলের ছেলে আনারুল ইসলাম এবং আনারুল ইসলামের দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম রুবেল (৩৩) এবং আতিকুর ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া মানিকনগর গ্রামের জিএম সাহিবুর রহমান (২৩), গোপালপুর গ্রামের আশিক ইকবাল (২৮), স্বপন ইকবাল (২৮), দেলোয়ার হোসেন দিপু (৩০) ও সাজু আহম্মেদ (৩২), মহাজনপুর গ্রামের মোস্তাক নাহিদ অনিক ও সাদ্দাম হোসেন এবং সদর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরোনো পোস্ট অফিস পাড়ার জাহিদ হাসান ও গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আনোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।
গত ২৩ মার্চ সিআইডির এক চিঠিতে এই ১৯ এজেন্টের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিআইডি সদর দপ্তরের অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট অনুসন্ধান স্লিপের মাধ্যমে মেহেরপুর জেলার ওই ১৯ জনের নাম, ঠিকানা, বয়স, পিসিপিআর রেকর্ডসহ বংশ পরিচয়ের বিশদ বিবরণ চেয়ে মেহেরপুরের পুলিশ সুপার ও জেলা সিআইডি কার্যালয়ে ওই চিঠিটি দেয়। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করলেও সিআইডির তদন্তাধীন বিষয় বলে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কালবেলায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে কয়েকজন এজেন্ট ও তাদের সম্পদের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। অফিসিয়ালি সেগুলো পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিনুর রহমান খান কালবেলাকে বলেন, ১৯ জন অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্টের বিরুদ্ধে ঢাকা সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগ থেকে অনুসন্ধানের একটি চিঠি এসেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন অফিসিয়ালি প্রকাশ বা আদালতে জমা হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া উচিত হবে না।
মন্তব্য করুন