সাতক্ষীরার আশাশুনিতে চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ ও অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে, আশাশুনি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস।
এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়ার পদচ্যুত প্রিন্সিপাল আওয়ামী দোসর মাওলানা আ. রশিদ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ করে নয় জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা করে কোটি টাকার বাণিজ্যে নেমেছেন।
তিনি বলেন, চেঁচুয়া মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসাটি আনুলিয়া ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত মাদ্রাসার শুভাকাঙ্ক্ষী নামধারী ব্যক্তিগণ নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে নিয়মিত কমিটি দ্বারা পরিচালিত না হয়ে এডহক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হতো। মাদ্রাসার কোন প্রিন্সিপাল না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল দিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরিচালিত হত।
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসাটিতে প্রথম শ্রেণি থেকে ফাজিল পর্যন্ত চারশতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি দেখিয়ে বিভিন্ন উপায়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে অভিযুক্তরা। প্রকৃত পক্ষে মাদ্রাসায় ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থীও নিয়মিত নেই। এমতাবস্থায় মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাও. ওলিউল্লাহ সকল নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ গোপনে ৪২১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি দেখিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকান তৈরি করেছেন। কাউকে না জানিয়ে রাতারাতি গোপনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিয়ার রহমানকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বানিয়ে কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে মাদ্রাসার নিয়মিত কমিটি তৈরি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২১ মে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি করে ৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে ২ জুন তারিখে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এখন তাদের অনুগত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার নামে কোটি টাকার মত নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি।
এতে আরও বলা হয়, নতুন কমিটির একজন দুটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পলাতক আছে। অন্যান্য ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা সহ নানাবিধ মামলা রয়েছে। আমরা বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমানের কাছে অবৈধ কমিটি গঠন ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা সঠিক তথ্য না দিয়ে আমাদের পত্রিকা দেখে নিতে বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আমাদের এলাকার চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ মাওলানা নামধারী আ. রশীদ ঢাকা মাদ্রাসা-ই আলিয়ার প্রিন্সিপাল ছিলেন। ৫ আগস্টের পর ঢাকাবাসীর জনরোষে চাকুরিচ্যুত হয়ে তিনি পালিয়ে এসেছেন। সেই দুর্নীতিবাজকেই মাদ্রাসার সভাপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে একজন ফেরারি আসামিসহ কমিটির অধিকাংশ সদস্য একই পরিবারের ব্যক্তি। তাই অনতিবিলম্বে চেঁচুয়া, মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল পূর্ব অবৈধ অনৈতিক উপায়ে গঠিত কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আনুলিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হারুন অর রশিদ, মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি রোকনুজ্জামান, শিক্ষানুরাগী আবু দাউদ সানা, রেজাউল করিম সানা ও আমিরুল ইসলাম।
মন্তব্য করুন