শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বদলেছে সমাজ ব্যবস্থা। আর এই নতুন সমাজে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনে রাস্তায় নামতে পিছপা হবো না।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে সাভারের গেন্ডা বালুর মাঠে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই শহীদদের স্মরণে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫’ উপলক্ষে এ শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আগের কোনো সরকার শ্রমিকের পক্ষে কাজ করেনি। বরং শ্রমিকের গুম, খুন, লাঠিপেটা হলেও ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, বিচারও হয়নি। কিন্তু এই সরকার শ্রমিকবান্ধব। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিতে দরজা সবসময় খোলা। শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনে সরকারের প্রতিনিধি হয়েও রাস্তায় নামতে দ্বিধা নেই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্টকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শিথিলতা আনা হয়েছে। কোনো শ্রমিককে কালো তালিকাভুক্ত করা যাবে না, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থানে আছে।
সমাবেশে তিনি স্পষ্ট জানান, শুধু কলকারখানা নয়, যেখানে পাঁচজনের বেশি শ্রমিক, সেখানেও লেবার অ্যাক্ট কার্যকর করা হবে। শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলে কারখানার লভ্যাংশের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ জমা বাধ্যতামূলক। ইতোমধ্যে সামাজিক ক্লাবগুলোতেও আইন কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে শুধু সরকার নয়, সমাজ ব্যবস্থারও পতন হয়েছে। এই ধ্বংসাবশেষ থেকে সুষম ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়তে সময় লাগবে। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।
সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া পোশাক কারখানা খোলার বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটা বিজিএমইএর দায়। তারপরও সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন- বেক্সিমকো পরিচালনায় বিদেশি সংস্থাগুলো আগ্রহী। পাশাপাশি কিছু মালিক ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিদেশ পালিয়ে গেছেন। ব্যাংকগুলো আর ঋণ দিতে চায় না। এ কারণে কিছু মালিককে বাধ্য করা হচ্ছে বকেয়া পরিশোধে। প্রয়োজনে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সমাজকল্যাণ ও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক শাখার প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতা এবং বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন