মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক কর্মকর্তার কারাদণ্ড

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শহীদুজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শহীদুজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক সাঁটলিপিকার একেএম শহীদুজ্জামানকে দুটি পৃথক ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) খুলনা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শহীদুজ্জামান সাতক্ষীরা জেলার পাটকেল ঘাটা উপজেলার পারকুমিরা গ্রামের বাসিন্দা মো. সোহরাব উদ্দিনের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর থানাধীন দেবনগর বেগম রোকেয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য অনুদান হিসেবে তিন লাখ টাকা পাওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন। আবেদনটি নিয়ে তিনি সাঁটলিপিকার একেএম শহীদুজ্জামানের অফিস রুমে যান।

২০১৭ সালের ৩০ জুলাই শহীদুজ্জামান গ্রহণ করে আবেদনপত্রটিতে সিল এবং স্বাক্ষর করে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলেন, অনুদান পাইয়ে দিলে সে ক্ষেত্রে তাকে শতকরা ৩০ শতাংশ হারে টাকা দিতে হবে। সে সময়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে তাকে তখন ১০ হাজার টাকা দেন।

পরবর্তীতে অভিযুক্ত শহীদুজ্জামান তাকে বলেন, স্কুলের নামে আরও দুই লাখ টাকা পাইয়ে দিতে পারব। সেক্ষেত্রে তাকে আরও ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক যোগাযোগ করলেও শহীদুজ্জামান তাকে ঘোরাতে থাকে এবং বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে তিনি ঘুষ দিতে রাজি হন।

২০১৮ সালের ৩১ মে অভিযুক্তের সঙ্গে দেখা করলে ওই শিক্ষককে বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য তাগিদ দেন। বিষয়টি অনৈতিক বিবেচনা করে প্রধান শিক্ষক দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের দ্বারা হাতেনাতে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। ৩ জুন প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান এ ব্যাপারে খুলনার দুদক পরিচালকের নিকট আবেদন করলে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য দুদক ফাঁদ পাতে।

২০১৮ সালের ১২ জুন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ কার্যালয়ে অবস্থান নেন দুদক কর্মকর্তারা। ওই দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান শহীদুজ্জামানের রুমে প্রবেশ করে এবং ৫০ হাজার টাকা প্রদান করতে চাইলে অভিযুক্ত শহীদুজ্জামান বলে, এক লাখ টাকা ঘুষ না দিলে কাজ হবে না। এ কথা শোনার পর তিনি বিভিন্নস্থান থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে তাকে দেন। টাকাটি নিয়ে শহীদুজ্জামান তার প্যান্টের পকেটে রাখে। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক সংকেত দিয়ে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে শহীদুজ্জামানের রুমে প্রবেশ করেন দুদক কর্মকর্তারা এবং তার কাছ থেকে ঘুষের ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক মো. মহতাব উদ্দিন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা থানায় মামলা করেন। একই বছরের ২৮ নভেম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনা দুর্নীতি দমন কমিশন সহকারী পরিচালক মো. শাওন মিয়া শহীদুজ্জামানকে আসামি করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং একই আদালতে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠন করা হয়।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ইয়াছিন আলী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায় ঘোষণার সময়ে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএসএফের বাধায় আটকে আছে বেড়িবাঁধ মেরামত কাজ

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে থাকা ৭ অঙ্গীকারনামা

আমরা আর গুম-খুনের ব্যবস্থায় ফেরত যাব না : তাসনিম জারা

আ.লীগকে ফেরানোর চক্রান্ত হলে দেশবাসী প্রতিহত করবে : জাগপা

মাদ্রাসাছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষক কারাগারে

জাল সনদে সাবেক এমপির স্ত্রীকে নিয়োগ, অধ্যক্ষ হাজতে

যুক্তরাজ্যে মাল্টিপল ভিসার আবেদন খালেদা জিয়ার

স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শটগান ও গুলি উদ্ধার

‘ভুল’ ঢাকতে ভুলের বৃত্তে বিওএ!

বিএমডিএ কার্যালয়ের সামনে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১০

সিঙ্গাপুরে সাঁতারু সামিউলের রেকর্ড

১১

প্রধান উপদেষ্টাকে সৌদি যাওয়ার আমন্ত্রণ

১২

ব্যক্তি স্বার্থে অনৈতিকভাবে কাউকে কিছু করতে দেওয়া হবে না : চসিক মেয়র

১৩

পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন নয় : চরমোনাই পীর

১৪

অর্থ পাচারের চেষ্টা : চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে যাত্রী গ্রেপ্তার

১৫

আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ভূমিকম্পের আগাম বার্তা সক্রিয় করবেন যেভাবে

১৬

সরকারের অসতর্কতায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস ইস্যুতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে : মঞ্জু 

১৭

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর সঙ্গে ঘরে ঘরে ছড়াচ্ছে চিকুনগুনিয়া

১৮

গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ‘বুশরা গ্রুপের’ তিন কর্মকর্তা

১৯

২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ / রিমান্ড শেষে আবুল বারকাত কারাগারে 

২০
X