সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর গ্রামে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গঙ্গাচড়া আমলি আদালতে তোলা হয়।
এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ বলেন, গঙ্গাচড়ার হিন্দুপল্লিতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে আদালতে তোলা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিংগেরগাড়ি মাঝাপাড়া গ্রামের ইয়াছিন আলী (২৫), মাগুড়া শ্রীপাড়ার স্বাধীন মিয়া (২৮), দক্ষিণ চাঁদখানা মায়াপাড়ার আশরাফুল ইসলাম (২৮), উত্তর সিংগেরগাড়ি পাঠানপাড়ার এস এম আতিকুর রহমান খান আতিক (২৮) ও দক্ষিণ সিংগেরগাড়ি চওড়াপাড়ার সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৬ জুলাই) ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর গ্রামের এক হিন্দু কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই ওই কিশোরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
রোববার (২৭ জুলাই) সাইবার সুরক্ষা আইনের মামলায় কিশোরকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো নির্দেশ দেন। তবে সেদিনই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিংগেরগাড়ি, মাগুড়া ও বাংলাবাজার এলাকা থেকে দফায় দফায় লোকজন মিছিল নিয়ে এসে হামলা চালান। পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। এতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী রবীন্দ্রনাথ রায় বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া মড থানায় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মন্তব্য করুন