তানভীর চৌধুরী, ফুলগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

২০০ বছরের পুরোনো কাঠের বাড়িটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী

ফেনীর ফুলগাজীতে অবস্থিত অপু চৌধুরী বাড়ি। ছবি : কালবেলা
ফেনীর ফুলগাজীতে অবস্থিত অপু চৌধুরী বাড়ি। ছবি : কালবেলা

বাংলার ইতিহাস আর ঐতিহ্যের খোঁজে কালবেলা ছুটে যায় লোকালয় ছেড়ে দূরে অপরূপ সৌন্দর্যের ফেনীর ফুলগাজীতে অবস্থিত অপু চৌধুরী বাড়িতে। ঐতিহ্যে আর নানা বৈচিত্র্যে ভরপুর অপু চৌধুরীর বাড়িটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

পুরোনো স্থাপত্য মানেই তো অপূর্ব কারুকাজ করা অট্টালিকা। যার দেয়ালে পরতে পরতে সৌন্দর্যের ছোঁয়া। মুক্তিযুদ্ধসহ নানা ঐতিহ্য বুকে ধরে এখনো দাঁড়িয়ে আছে ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার অপু চৌধুরীর বাড়ি। মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিবিজড়িত দুই শতাধিক বছরের পুরাতন বাড়িটি দেখতে ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঐতিহ্যপ্রেমী মানুষজন।

এই বাড়ির উত্তরাধিকারী অপুরঞ্জন চৌধুরী জানান, আমার পিতামহরা ছয় ভাই ছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচ ভাই বার্মা দেশে কাঠের ব্যবসা করতেন। অপর একজন দেশে থাকতেন। সেখান থেকে নদী পথে এই সমস্ত কাঠ এনে আমার পিতামহরা এই স্থাপনা নির্মাণ করেন। স্থাপনাটির বয়স প্রায় ২০০ বছর।

তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন আমজাদহাট ইউনিয়নের মধ্যে এই বাড়িটা সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছিল। সেই থেকে এই বাড়িটির পুনর্বাসন বা পুনর্নির্মাণ কাজ মোটেও করা হয়নি। এই ঘরগুলো দোতলাবিশিষ্ট। এই ঘরে এখনো মানুষ বসবাস করে।

এই স্থাপত্য নির্মাণের কাঁচামাল প্রসঙ্গে অপুরঞ্জন চৌধুরী বলেন, এই স্থাপত্যের সমস্ত কাঠগুলো তৎকালীন বার্মাদেশ থেকে চট্টগ্রামে আসত। পরে চট্টগ্রাম থেকে মুহুরি নদী হয়ে আমাদের বাড়ির পাশের কহুয়া খালে আসত। খাল থেকে শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে কাঠগুলো বাড়িতে নিয়ে আসতেন। এই স্থাপত্যে যে ইটগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো আমাদের বাড়িতেই কারিগররা তৈরি করত। এসব কারিগরের বসতি ছিল ঢাকায় তারা সুদূর ঢাকা থেকে এসে এই সমস্ত স্থাপনাগুলো নির্মাণ করেন। এই প্রচীন স্থাপত্য নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়েছে বার্মা দেশের কাঠ, ইট, তৎকালীন সিমেন্ট ছিল না সিমেন্টের বদলে ছিল সুরকি। এই সুরকি সিমেন্টের চাইতেও শক্তিশালী।

দুই শতাধিক বছরের স্থাপনা দেখতে এসে সিরাজ নামে এক যুবক জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই স্থাপত্যটি আমজাদহাট ইউনিয়নের মধ্যে আছে তা অনেকের অজানা। এই বাড়িতে প্রচীন দুটি স্থাপনা খুবই চমৎকার।

খেজুরিয়া মমতাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এই বাড়িটিতে লেগে আছে। আমাদের দাবি এই বাড়িটি ফেনী জেলার প্রচীন স্থাপত্যগুলোর তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানুক।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সকালে খালিপেটে গরম নাকি ঠান্ডা পানি পান করবেন

দুম্বার সংকর প্রজাতি উদ্ভাবন করলেন মেহেরপুরের খামারি

জুলাই শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আবু সাঈদের বাবা

ভারতে গেল প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম

এবার আমাদের লক্ষ্য সংসদ ভবন : নাহিদ

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর

বানরের উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

‘সংস্কার কমিশনকে বলেছি, ৫ আগস্টের আগে জুলাই সনদ করতে হবে’

কোনো দলের সম্পদ নয়, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের : সারজিস

ফিফার নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও এক ক্লাব

১০

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন

১১

ওসি পদায়নে ২২ দফা নীতিমালা

১২

সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক সম্পত্তি মেরামতে সহযোগিতা দেবে ভার‍ত

১৩

যশোরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সেনাবাহিনীর সহায়তা

১৪

নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা ইমরান খানের সাবেক স্ত্রীর

১৫

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে উত্তরায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল 

১৬

কিছু ষড়যন্ত্রকারী দেশের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করতে চায় : এনডিপি

১৭

চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন জামায়াতের আমির

১৮

বাঙলা কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবির ও সেক্রেটারি সাকিব

১৯

উপুড় হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস, ডেকে আনছেন যেসব ক্ষতি

২০
X