নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

শীত এলেই দিগন্তজোড়া সবুজ, বর্ষার মিনি কক্সবাজার: হালতি বিল

হালতি বিল। ছবিঃ সংগৃহীত
হালতি বিল। ছবিঃ সংগৃহীত

বর্ষায় মিনি কক্সবাজার। যে দিকে চোখ যায় অথৈ জলরাশি। পানির ঢেউ ভেঙে ভেঙে বাহারি রঙের শ্যালো চালিত নৌকার চলাচল। তবে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যায় এই দৃশ্যপট। তখন সেই অথৈ জলরাশির জায়গায় দেখা মেলে দিগন্তজোড়া সবুজ ধানক্ষেত, যা কিছু দিন পরেই সোনালি রঙে ভরে ওঠে। বাতাসে দুলতে থাকে মাইলের পর মাইল ধানের শিষ। প্রকৃতির এমন অপরূপ দৃশ্যের দেখা মিলবে নাটোরের হালতি বিলে। জেলা শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে নলডাঙ্গা উপজেলার একপ্রান্তে প্রায় ৪০ হাজার একরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এই বিলের অবস্থান। ব্রিটিশ সরকারের সময়ে এই বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে বিরল প্রজাতির ‘হালতি’ পাখি বসত বলেই এর নামকরণ করা হয়েছিল হালতি বিল। তখন ব্রিটিশ সরকারের লোকজন এই বিলে আসতেন হালতি পাখি শিকার করতে। হালতি দেশের সবচেয়ে গভীর বিলও।

প্রায় ১২ মিটার গভীর এই বিলে প্রায় সারা বছরই পানি থাকে। বর্ষায় পানির পরিমাণ বেড়ে যায় অনেক বেশি। শুকনো মৌসুমে বিলের আয়তন কমে গেলেও তা প্রাণ ফিরে পায় বর্ষায়।

নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে অটোরিকশায় ২৫ থেকে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে হালতি বিলের প্রবেশপথ পাটুলঘাটে পৌঁছানো যায়। এ ছাড়া নলডাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে ভ্যান, অটোরিকশায় পাটুলঘাটে যাওয়া যায়। এই ঘাটে বাঁধা থাকে সারি সারি নৌকা। ঘণ্টা হিসাবে চুক্তি করে নৌকায় চেপে হালতি বিলে ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে নৌকায় ওঠার আগে জেনে নেওয়া ভালো, নৌকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসামগ্রী আছে কি না। খাবারের জন্য পাটুলঘাটে আছে কিছু হোটেল।

স্থানীয়রা জানান, হালতি বিলে সারা বছর পর্যটক এলেও বর্ষায় সবচেয়ে বেশি আসেন। বর্ষায় প্রতিদিন দুপুরের পর থেকেই আসতে থাকেন দর্শনার্থীরা। ফলে স্থানীয় বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা বেড়ে যায়। এই মৌসুমটায় অনেক বেকারও কাজের সন্ধান পান। এই বিলের অন্যতম আকর্ষণ হলো পাটুল ঘাট থেকে হালতি বিলের মাঝ দিয়ে খাজুরা পর্যন্ত নির্মিত সড়ক। এই সড়কের বড় বৈশিষ্ট্য হলো শুকনো মৌসুমে এর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও বর্ষায় সড়কটি ডুবে যায়। তবে যাতায়াতের জন্য সব সময় থাকে সাধারণ ও শ্যালো চালিত নৌকা।

বিলের পশ্চিম দিকে মাধনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইনজুড়ে লাখো পর্যটকের উপচে পরা ভিড় জমে। মাধনগর ও পাটুল থেকে প্রতিদিন যতদূরে যাওয়া যায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেন দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ দল বেঁধে, আবার অনেকে পরিবার নিয়ে নৌকায় চেপে ভেসে চলেন বিলের মধ্যে। বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নাটোর ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকেও আসেন দর্শনার্থীরা।

তবে শুকনো মৌসুমে হালতি বিলের দৃশ্যপট সম্পূর্ণ বদলে যায়। সারা বিলজুড়ে থাকে সবুজ ধানক্ষেত। এর কয়েক দিন পরই তা সোনালি রঙে ভরে ওঠে। বাতাসে দুলতে থাকে মাইলের পর মাইল ধানের শিষ। চাহিদার চেয়েও অনেক বেশি ধান উৎপাদন হয় এই বিলে। ডুবন্ত সড়কটি জেগে ওঠে, যানবাহনের ছুটাছুটিতে সড়কটি হয়ে ওঠে ওই এলাকার প্রাণ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পদত্যাগের পর আসিফ-মাহফুজকে যে পরামর্শ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

ভারত বধের স্বীকৃতি হিসেবে ৭ লাখ টাকা করে পেলেন হামজারা

নবীজিকে (সা.) স্বপ্নে দেখার ৩ আমল

হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সুখবর দিলেন ধর্ম উপদেষ্টা

পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান সেনাপ্রধানের

বিএনপিতে যোগ দেওয়া সেলিমকে নিয়ে এলডিপি নেতাদের অভিযোগ

কারওয়ানবাজারে সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

উদার-সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতির পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে : শিবির সভাপতি

আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে কোহলির বড় লাফ

ছাত্রশিবির নেতার বাবাকে গুলি করে হত্যা

১০

দুটি বিষয়ের অনুমোদন পেল নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়

১১

পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশ নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা

১২

অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৩

সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অর্থ উপদেষ্টা, উত্তেজনা চরমে

১৪

লালমাটিয়ায় এভেরোজ স্কুলে হামলা, শিক্ষক-কর্মচারী আহত

১৫

সুখবর পেলেন প্রাথমিকের ৬৫,৫০২ প্রধান শিক্ষক

১৬

ব্যারিস্টার ফুয়াদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

১৭

তারেক রহমানের আসনে যাকে প্রার্থী করল এনসিপি

১৮

বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি, ২ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

১৯

উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ পদত্যাগ করেছেন

২০
X