দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম রেজাউল করিম তানসেন। এবারের নির্বাচনে তার পক্ষে ভোট না করার ঘোষণা দিয়েছেন নন্দীগ্রাম উপজেলার জাসদের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াসহ নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ তুলে নির্বাচনে তানসেনের ভোট বর্জন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন নেতারা।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে নন্দীগ্রাম মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপজেলা জাসদ নেতা কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বা আলোচনা পর্যন্ত করেননি তানসেন। নেতাকর্মী ছাড়াই দলীয় মনোনয়ন ফরম এবং নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ-জমা দিয়েছেন। তানসেন দুই দফায় এমপি হওয়ার পর থেকে দলীয় শৃঙ্খলা মানেন না। নিজ দলের কর্মীদের অবমূল্যায়ন করেছেন। এমনকি ১৪ দলের সমর্থনে এমপি হয়ে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখেননি। এবারের নির্বাচনে জাসদ মনোনীত প্রার্থী তানসেনের পক্ষে নেতাকর্মীরা কেউই কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কামরুজ্জামান কামরুল আরও বলেন, আমি উপজেলা জাসদের সভাপতি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম, কিন্তু দলীয় এমপি (তানসেন) কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। আজ নেতাকর্মীরা ঐকবদ্ধ ও একমত হয়েছেন, তার পক্ষেও কেউ কাজ করবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কামরুল বলেন, নির্বাচনে চারবারের সাবেক এমপিসহ বড় বড় নেতা ও অনেক যোগ্য ব্যক্তিরা প্রার্থী হয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকে যাকে যোগ্য মনে হবে নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করবে এবং তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করাসহ নির্বাচন উৎসবমুখর করতে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। দলের নেতাকর্মীর পাশাপাশি নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলার জনগণ জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান করবে। দলের নেতাকর্মীরা একসঙ্গে বসে বৈঠক করে একমত হয়েছি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাসদ নেতা আলহাজ শামীম হোসেন, শহিদুল ইসলাম, অনিল চন্দ্র, আলহাজ আব্দুল গাফফার, ফরিদুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম মুক্তা, আব্দুল বাছেদ বাচ্চু, বাদশা মিয়া, শাহ আলম, পলাশ চন্দ্র, নাসির উদ্দিনসহ নেতাকর্মীরা। এ প্রসঙ্গে জাসদ মনোনীত প্রার্থী ও বগুড়া জেলা জাসদ সভাপতি একেএম রেজাউল করিম তানসেন এমপি বলেন, তারা যে বৈঠক বা সিদ্ধান্তের কথা বলছে সেখানে জাসদের নেতাকর্মীরা ছিলেন না। কামরুজ্জামান কামরুল বর্তমানে জাসদের কেউ না। সে দল থেকে কিছুদিন পূর্বে পদত্যাগ করেছে। তারা অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। জনগণের ভোটে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি এবং কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই আবারও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। এবারও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব ইনশাআল্লাহ।
দল থেকে পদত্যাগ করেছেন কিনা- জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দলীয় এমপির (তানসেন) অনিয়মের কারণে আমি দল থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নেতারা পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। নেতারা উপজেলার কর্মীদের পাশে থাকাসহ সাংগঠনিক কাজ করতে বলেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবর রহমান রুস্তম ও সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক শাহীনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন