খুলনার পাইকগাছায় সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই যথেচ্ছ স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, কৃষিজমি ও নদী থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। কোনো কোনো মালিক বলছেন, জরিমানার টাকা দিলেই সবকিছুই বৈধ।
উপজেলার চাঁদখালী, গদাইপুর, রাড়ুলী ও হরিঢালীতে ১৫টি ইটভাটা কৃষিজমিতে অবস্থিত। এসবের প্রায় সবগুলোই জনবসতি এলাকা, সরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রধান সড়ক, গ্রাম ও বনাঞ্চলের ধারের কাছে গড়ে তোলা হয়েছে। মাটি কাটা হচ্ছে আবাদি জমি থেকে। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অধিকাংশরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স।
ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে পরিবেশ হচ্ছে নষ্ট। নীতিমালা অনুযায়ী যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্বে ও বনাঞ্চল থেকে ২ কিলোমিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপনের কথা থাকলেও অল্প দূরত্বে এসব স্থাপিত। প্রায় প্রত্যেকটি ইটভাটার পাশে সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, হাটবাজার ও ব্যস্ততম সড়ক অবস্থিত।
পাইগাছায় স্থাপিত ভাটাগুলো হলো হরিঢালীর মাহবুবুর রহমান রঞ্জুর যমুনা ব্রিকস ১ ও ২, গদাইপুর মুজিবুর রহমানের ফাইভ স্টার, ফতেমা রহমানের এফএফবি, চাঁদখালীর নাজমুল হুদা মিথুনের এসএমবি, মহিউদ্দিন খানের বিএকে, বাদশার খানের খান ব্রিকস, মুনছুর গাজীর এস এম ব্রিকস, আব্দুল হালিমের স্টার ব্রিকস, আব্দুল মান্নান গাজীর বিবিএম ব্রিকস, আব্দুল জলিলের এডিবি ব্রিকস, শহাজাদা ইলিয়াসের এমএসবি ব্রিকস, সিরাজুল ইসলামের এসবিএম ব্রিকস, শফিকুল ইসলামের এমবিএম ব্রিকস, রাড়ুলী ইউনিয়নে মিনারুল ইসলাম ও ডালিম সরদারের ইটের ভাটা।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী আদালতের উদ্যোগে প্রতি বছর ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হলেও ভাটা মালিকরা জরিমানা দিয়ে যথারীতি ভাটায় ইট পুড়িয়ে আসছে।
ভাটার মালিক বিষ্ণুপুর মিথুন জানায় জরিমানার টাকা দিলে সব বৈধ হয়ে যায়। এ কারণে সে পরিমাণ টাকা আগে থেকেই রেডি করে ভাটার কাজ শুরু করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকটা ভাটা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৩ লক্ষাধিক জরিমানার টাকা আদায় করা হয়েছে। মাটি কেটে বিক্রি করার অপরাধে চার জনকে জেল দেওয়া হয়েছে।
ভাটা মালিক মিঠু জানান, তিন বছর যাবৎ পরিবেশের কোনো ছাড়পত্র পাইনি। লাইসেন্স নেই, তবে সরকার আমাদের কাছ থেকে আয়কর ও ভ্যাট আদায় করছে। কয়েকবার ভাটা ভেঙে দেওয়ার কথা শিকার করেছেন তিনি।
মন্তব্য করুন