জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে মাহমুদপুর বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠে। পরে ‘ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায়ের অভিযোগ’ শিরোনামে রোববার (১০ মার্চ) দৈনিক কালবেলা এবং একাধিক প্রিন্ট ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের ডেকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) মাহমুদপুর বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের ডেকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমএইচ নূরুন্নবী চৌধুরী রতন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা অফিসার আমান উদ্দিন মন্ডল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বলেন, আমরা কালবেলাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন সাহসী সংবাদ প্রকাশ করার জন্য। আপনারা সংবাদ প্রকাশ করেছেন বলেই তারা বাধ্য হয়ে টাকা ফেরত দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, তবে আবার ভয়ও হচ্ছে যদি স্যারেরা আমাদের ওপর রাগ করে ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর কম দেয়। আমরা আশা করি, স্যারেরা আমাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমনটা করবেন না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমএইচ নূরুন্নবী চৌধুরী রতন কালবেলাকে বলেন, শুধু আমাদের স্কুলেই নয় প্রতিটি স্কুলেই প্রাকটিক্যালের জন্য ২শ/৩শ টাকা করে নেওয়া হয়। তবে আমাদের স্কুলে যা নেওয়া হয়েছে তার পরিমাণটা একটু বেশি হয়েছে। আমি স্কুলে গিয়ে সব শিক্ষককে রিমান্ডে নিয়েছি। যে শিক্ষক নিয়েছে তাকে শোকজ করতে চেয়েছি। পরে সকল শিক্ষার্থীর টাকা ফেরত দিতে বলেছি। তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা অফিসার আমান উদ্দিন মন্ডল কালবেলাকে বলেন, টাকা নিয়েছিল বিষয়টি সঠিক। তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের ডেকে তালিকা করে ওই ৬০০ টাকা ফেরত দিচ্ছে। মাহমুদপুর বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, তারা এবার মোট ১২০ জন শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ৩৮ জন, মানবিক বিভাগের ৪২ জন এবং ভোকেশনাল বিভাগের ৪০ জন। ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে বিজ্ঞান বিভাগের প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৬শ টাকা এবং মানবিক বিভাগের প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩শ টাকা করে আদায় করেছে। এর মধ্যে কয়েকজন টাকা না নিয়ে আসায় তারা পরে দিবে মর্মে সময় নেয়।
পরীক্ষার্থীরা আরওে অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এইচএম নূরুন্নবী চৌধুরী রতনের নির্দেশে কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মোল্লাসহ অন্য শিক্ষকরা প্রতি বিষয়ের ব্যবহারিক খাতা ও ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ এসব টাকা আদায় করেছেন।
এ সময় টাকা না দিলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
ওই দিন অভিযুক্ত শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ অর্থ আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করলেও কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে আদায়কৃত অর্থ শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে বাধ্য হন অভিযুক্ত শিক্ষকরা।
মন্তব্য করুন