সবুজ পাতা আর হলুদ ফুলে একাকার হয়ে আছে পুরো ক্ষেত। পাতার ফাঁকে ও মাচার নিচে ঝুলে আছে ছোট-বড় করলা। ক্ষেত পরিচর্যার পাশাপাশি বিক্রির জন্য করলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহালক্ষীপাড়ায় পতিত জমিতে করলা চাষ করে সফল হয়েছেন স্থানীয় কৃষক সোহেল হক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ফলনও পেয়েছেন আশানুরূপ। বাজারে দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা তার।
কৃষক সোহেল হক কালবেলাকে বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে এ বছর আমি অন্যান্য সবজির সঙ্গে করলা চাষ করেছি। গাছ বেড়ে ওঠার জন্য পুরো ক্ষেতে মাচা তৈরি করে দিয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করায় ফসলে রোগবালাই কম হয়।
তিনি বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় করলা চাষে লাভ বেশি। যে কারণে বাড়ির পাশের ৩৯ শতকের পতিত জমিতে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি উন্নত জাতের করলা চাষ করেছি। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম হওয়ায় করলার ফলন ভালো হয়েছে।
সোহেল হক আরও বলেন, করলা পাইকারদের কাছে প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি। বাজারে দামও ভালো। বাজারে চাহিদা থাকায় পাইকাররা ক্ষেত থেকেই কিনে নিচ্ছেন।’
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, 'করলা তেঁতো স্বাদের সবজি। তবে এর মধ্যে রয়েছে নানা গুণ। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী সবজি। নিয়মিত খেলে করলা ওজন এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি চর্মরোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, করলা বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায়, পতিত জমি কিংবা টবে সহজেই করলা চাষ করা যায়। এ সবজি চাষে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন খুব কম হয়। এ ছাড়া রোগবালাইও কম হয়। এজন্য ধান কিংবা অন্যান্য মাঠ ফসলের তুলনায় করলা চাষ বেশি লাভজনক হওয়ার কারণে সারাবছর বাজারে চাহিদা থাকে।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণপাড়ার মাটি ও পরিবেশ অনুকূল থাকায় করলা চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। সোহেল একজন আদর্শ সবজি চাষি। তিনি শসা, রেড ক্যাবেজ চাষেও সফলতা দেখিয়েছেন। উন্নত পদ্ধতিতে করলা চাষেও সফল হয়েছেন। অন্যান্য কৃষকও অনুপ্রাণিত হবেন। কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছে।
মন্তব্য করুন