অবশেষে বাতিল করা হয়েছে চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটের সেই আলোচিত ঘাট ইজারাদার এস এম আনোয়ার হোসেনের প্রার্থিতা। তথ্য গোপন করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য হলফনামা দাখিল করার অভিযোগে তার প্রার্থিতা বালিত করা হয়েছে। একই অভিযোগ আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ জুয়েলের বিরুদ্ধেও।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকাননস্থ সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসের কনফারেন্স রুমে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হক। বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি কালবেলাকে বলেন, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান ও পুরুষ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য ২৮ জন প্রার্থী তাদের হলফনামা দাখিল করেন। এরমধ্যে বুধবার মনোনয়নপত্র বাছাইকালে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে অবশিষ্ট ২৬ জন প্রার্থীকে বৈধভাবে মনোনীত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেই দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তাদের হলফনামায় তথ্য গোপন থাকার কারণে তা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে সকাল ১০টায় সন্দ্বীপ, মিরসসাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। এ সময় বাকি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও সন্দ্বীপের দুই প্রার্থী এস এম আনোয়ার হোসেন ও শেখ মোহাম্মদ জুয়েলের শুনানি সাময়িক স্থগিত করা হয়। পরে বিকেল পৌনে ৩টায় ফের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটের সেই আলোচিত ঘাট ইজারাদার এস এম আনোয়ার হোসেন। দ্বিতীয় দফার মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শুনানিকালে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ।
শুনানিকালে রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, জেলা পরিষদ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এস এম আনোয়ার হোসেন তাদের (জেলা পরিষদ) বকেয়া পরিশোধ করেননি। এছাড়া ৫৪ লাখ টাকা এবং এক মাসের জন্য অগ্রিম বাবদ ২৭ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ৮১ লাখ টাকা জেলা পরিষদে জমা করেন তিনি। কিন্তু সেই টাকার বিষয়টি উল্লেখ করেননি হফলনামায়।
অন্যদিকে, উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী, যদি কেউ কোনো সমবায় সমিতি বা সরকারিভাবে চুক্তি ব্যতিত সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ এলাকায় সরকারকে কোনো পণ্য সরবরাহ করে বা সরকারের কোনো চুক্তি বাস্তবায়ন করে অথবা সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। যেহেতু তিনি খাস আদায়কারী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত, তাই উপজেলা নির্বাচনের আইন অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে অযোগ্য।
অন্যদিকে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করায় শেখ মোহাম্মদ জুয়েল নামে আরেকজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে। তবে তাঁরা আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন।
জেলা পরিষদের সচিব দিদারুল আলম শুনানিকালে বলেন, জামানত হিসেবে এস এম আনোয়ার হোসেন যে টাকা আমাদের (জেলা পরিষদ) পরিশোধ করেছেন তা এখনো জমা রয়েছে। এই টাকা আমরা কোনো লেনদেনের সঙ্গে সমন্বয় করিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম আনোয়ার হোসেন শুনানি শেষে কালবেলাকে বলেন, আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। তবে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমি আপিল করব।
মন্তব্য করুন