মিঠু মুরাদ, পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪, ০১:১২ পিএম
আপডেট : ০১ মে ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
মে দিবস

পাথর ভাঙার শ্রমিকদের ঝুঁকি বেশি, মজুরি কম

বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথরভাঙ্গার কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ছবি : কালবেলা
বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথরভাঙ্গার কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ৩০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক পাথরভাঙা ও পাথর লোড-আনলোডের কাজে জড়িত। এ কাজে রয়েছে শ্রমিকদের মৃত্যুর ঝুঁকিও। শ্রমিকদের দাবি, তারা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। এ অঞ্চলে তেমন কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় শ্রমিকরা কম মজুরিতেই পাথর ভাঙার কাজ করেন।

শ্রমিকরা জানান, তারা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাথরভাঙার কাজ করে মজুরি পান ৪০০ টাকা। মজুরির এ টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে পারেন না। পরিবারের লোকজনের অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে পারেন না। কোনোদিন কাজ বন্ধ থাকলে সেদিন থাকতে হয় অনাহারে-অর্ধাহারে। সংসার চালাতে অন্যের কাছে ধারদেনাও করতে হয়। পাথর ভাঙার কাজে মজুরি ছাড়া বাড়তি কোনো সুযোগ সুবিধা পান না শ্রমিকরা।

সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন সূত্র জানায়, লালমনিরহাটের পাটিগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে ৩০ হাজার শ্রমিক পাথরভাঙা ও পাথর লোড-আনলোড কাজ করছেন। তাদের মধ্যে নারী শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ২০ ভাগ।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাথরভাঙা শ্রমিক সহিদুল ইসলাম বলেন, ১০ বছর ধরে পাথরভাঙা শ্রমিকের কাজ করছি। এ কাজ করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। মরণব্যাধি সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু মজুরি খুবই কম। এ অঞ্চলে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকলে পাথরভাঙা শ্রমিকের কাজ করতাম না। দিনভর কঠোর পরিশ্রম করে মজুরি পাই ৪০০ টাকা। মাঝে মাঝে ওষুধ কিনতে অনেক টাকা চলে যায়।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাথরভাঙা শ্রমিক সহিদার রহমান বলেন, মেশিনে পাথরভাঙার কারণে পাথরের ধুলা নাক-মুখ দিয়ে ভেতরে ঢুকে ফুসফুসে জমে যায়। এ কারণে পাথরভাঙা শ্রমিকরা সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হন। আমাদের অনেক সহকর্মী সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এখনো অনেক শ্রমিক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। মেশিন মালিকরা কখনোই আমাদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেন না। কোনো শ্রমিক ন্যায্য মজুরি দাবি করলে তাকে আর কাজে নেওয়া হয় না। এই ভয়ে আমরা ন্যায্য মজুরির দাবিও করতে পারছি না।

বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথরভাঙা মেশিন মালিক দুলাল হোসেন বলেন, এ অঞ্চলে চাহিদার চেয়ে শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় শ্রমিকরা কম মজুরিতেই পাথরভাঙার কাজ করেন। দুই হাজারের বেশি পাথরভাঙার মেশিনে শ্রমিকরা কাজ করেন। প্রত্যেক মেশিনে ১২ থেকে ২৫ জন শ্রমিক কাজের সুযোগ পান। অন্যান্য মেশিন মালিকরা শ্রমিক মজুরি বাড়ালে আমিও শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি করবো।

লালমনিরহাট সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, পাথরভাঙা শ্রমিকদের একত্রিত করতে কাজ করা হচ্ছে। তাদেরকে একটি প্লাটফর্মে এনে শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দেওয়া হবে মেশিন মালিকদের। এতে দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পাথরভাঙা শ্রমিকদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০০ টাকা মজুরি দাবি করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছয় বছরে দুই পিলার

লজ্জাজনক এ হারের দায় কার?

শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে বুদ্ধের শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন : প্রধানমন্ত্রী 

উপজেলা নির্বাচন / দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান হলেন যারা

বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

সাঁকো নির্মাণ নিয়ে বিরোধ, যুবককে কুপিয়ে হত্যা

স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা নিয়ে সভা আজ

বুধবার ঢাকার যেসব এলাকায় যাবেন না

ইতিহাসের এই দিনে স্মরণীয় যত ঘটনা

২২ মে : নামাজের সময়সূচি

১০

অবসরের পরেও চেয়ারে তিনি, ৩ দিনে ৩৪ কোটি টাকার ঘুষ

১১

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় শিক্ষার্থী নিহত

১২

বিনা টিকিটে ১২ বছর রেল ভ্রমণ, অতঃপর...

১৩

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নারী শ্রমিককে যৌন হয়রানি

১৪

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম জার্নাল প্রকাশিত

১৫

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে ‘সেমিস্টার ডে ২০২৪’ উদ্‌যাপন

১৬

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণের ওপর হামলার অভিযোগ

১৭

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন ফখরুল

১৮

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধরাশায়ী হলো বাংলাদেশ

১৯

রাজধানীতে বিটিআরসির অভিযান, সরঞ্জামাদি জব্দ

২০
X