ঈদুল আজহাতে দা-বঁটি-ছুরি-চাপ্পলের পাশাপাশি অপরিহার্য আরেকটি পণ্য হলো কাঠের খাইটা। মূলত তেঁতুল গাছের মোটা গুঁড়ি গোল করে কেটে এই খাইটা তৈরি করা হয়। মাংস টুকরো করতে এই খাইটা ব্যবহার করা হয়। যা না হলে মাংস কাটা একেবারেই অসম্ভব।
কোরবানি পশু কেনার সঙ্গে সঙ্গে কোরবানি দাতারা কাঠের খাইটা কিনতে ভুলেন না। নাটোরের বিভিন্ন বাজারে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গোশত কাটার মৌসুমি ব্যবসা কাঠের গুঁড়ি বা খাইটার বেচাকেনা বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দামও। আগে সব বাজারেই পিস হিসেবে এ খাইটা বিক্রি হলেও নাটোর শহরে বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। নাটোর শহরের হাফরাস্তা এলাকার খাইটা ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির মুন্সী ৩০ টাকা কেজি দরে এই খাইটা বিক্রি করছেন।
হুমায়ুন কবির মুন্সী জানান, সারা বছর তেমন একটা বিক্রি না হলেও ঈদ মৌসুমে এর বিক্রি বেড়ে যায় কয়েকশ গুণ। এখন বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ কিনতে হচ্ছে মণ দরে। তাই আমরাও এটি কেজি দরে বিক্রি করছি। তেঁতুল গাছের খাইটা সবচেয়ে ভালো। এখন সেই গাছ পাওয়া খুবই দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। যে কারণে এর দামও বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। অন্যান্য উপজেলার হাট-বাজার এলাকায় রাস্তার পাশে থরে থরে সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেছে এসব খাইটা। তবে ব্যবসায়ীরা দুষছেন কাঠের দামকে।
শনিবার (১৫ জুন) পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, রসুন হাট পুরাতন ব্রিজ, ছাতার মোড়, ফার্নিচার পট্টিসহ বিভিন্ন মোড়সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব খাইটা। ছোট-বড় নানা আকৃতির এসব খাইটা কিনছেন পশু কোরবানি দাতারা।
খাইটা বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, আকার অনুযায়ী ১শ থেকে ৬শ টাকা দামের খাইটা রয়েছে তার কাছে। দাম বেশির কারণ হিসেবে তিনি জানান, অন্যান্য জিনিসের মতো কাঠের গাছের দামও বেড়েছে। তিনি আরও জানান, সব কাঠে খাইটা হয়নি। তেঁতুল কাঠের খাইটা সব থেকে ভালো আর এ কাঠের খাইটার চাহিদা-দামও দুটোই বেশি।
তিনি আরও জানান, ৫-৭ বছর ধরে কোরবানির ঈদের আগে খাইটার ব্যবসা করেন। গত বছরও প্রায় ৩শ পিস খাইটা বিক্রি করেছিলেন। এ বছরও একই ধরনের বিক্রি হবে বলে আশা তার। এবারও ভালো লাভের আশা করছেন তিনি।
পৌর শহরের আনন্দনগর মহল্লার বাসিন্দা বদিউজ্জামান জানান, তিনি এ বছর কোরবানি উদ্দেশ্যে একটি ছাগল কিনেছেন। গোস্ত প্রক্রিয়ার জন্য একটি মাঝারি আকৃতির খাইটা কিনতে এসেছেন। আগের বছরগুলোতে যেগুলো কেনা হয়, সেগুলো নষ্ট হয়ে যায় অযত্নে অবহেলায়। তাই নতুন করে কিনলাম আবার। দরদাম শেষে ২৫০ টাকায় একটি খাইটা কিনেছেন তিনি। তার দাবি, গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম বেশি।
মন্তব্য করুন