মেস মালিক ও তার স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কয়েকজন ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের দাবি, অনুমতিবিহীন গভীর রাতে রুমে পুরুষ মানুষ প্রবেশ, মনগড়া বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ ‘বিশ্বাস’ মেসের মালিক মো. রবিউল ইসলাম (৫৫) ও তার স্ত্রী তানিয়া বেগম।
কিন্তু বুধবার বাড়িওয়ালা শিক্ষার্থীদের নোংরা ভাষায় গালাগালসহ একপর্যায়ে মারধর করলে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীসহ সবার সামনে আসে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ওই মেসের মালিক ও তার স্ত্রীর নামে যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডির তথ্যমতে, যশোর কোতোয়ালি মডেল থানাধীন আমবটতলা বাজারসংলগ্ন বিশ্বাস মেসে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ভাড়া থাকেন। বুধবার বিকেল ৫টার সময় বিবাদীদ্বয়ের (রবিউল ইসলাম ও তানিয়া বেগম) সঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ভাড়া নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে বিবাদীদ্বয় ছাত্রীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তামান্নাকে (ছদ্মনাম) মারধর করে। আমি (সামিউল) চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে নিচতলা গিয়ে বিবাদীদ্বয়ের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমাকে মারধর করে এবং আমাকে ও আমার সহপাঠীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
একপর্যায়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বাড়ির মালিক, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে বিবদমান বাকি সমস্যাগুলো সমাধান করেন। পরে ছাত্রীরা নিরাপত্তার আশঙ্কা করলে পুলিশ প্রশাসন ছাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাস দেয়।
মেসের ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বলেন, মেস মালিক ও তার স্ত্রী বিভিন্ন সময় মেসের ছাত্রীদের মানসিক নির্যাতন করে আসছে। কিছুদিন পরপর মেসের সিট ভাড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের ভাড়া বৃদ্ধি করে। অসামঞ্জস্য বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণ করে। বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেখতে চাইলে তাদের নোংরা ভাষায় কথা শোনায়। কেউ মেস ছেড়ে দিতে চাইলে বলে, ছয় মাসের টাকা দিয়ে যেতে হবে।
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মেস মালিক সময়ে-অসময়ে মেয়েদের রুমে চেলে আসে। যার ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগী। মেসের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো না। যে কোনো সময়ে বাড়িওয়ালাসহ বাইরের লোক মেসের ভেতর প্রবেশ করে। কোনো সমস্যা নিয়ে অভিযোগ দিতে গেলে উল্টো আমাদের নোংরা ভাষায় কথা শোনায়।
তবে এসব অস্বীকার করেছেন বাড়িওয়ালা রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. সাদিদ হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ বিশ্বাস মেসে ছাত্রীদের সঙ্গে বাড়িওয়ালার বাগ্বিতণ্ডার খবর পেয়ে মেসে যাই এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন