ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকারের স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল করা হয়েছে।
বুধবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে এ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানার সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে ইনস্টিটিউটের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শেখ তোহিদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল হাকিমের সহধর্মিণী সুমি সরকার ও পুত্রবধূ ডা. নুসরাত আহমেদ।
শোক সভা ও দোয়া মাহফিলে ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক আবদুল হাকিমের সাথে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন। এসময় অনেকেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন, ফিরে যান হারানো সব স্মৃতিময় অতীতে।
বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম বলেন, স্যারের (অধ্যাপক আবদুল হাকিম) ক্লাস অনেক উপভোগ্য ছিল। তিনি বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে ক্লাস নিতেন। তার সাথে কাটানো সময়গুলো আজও মনে পড়ে। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ওনার সাথে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো ছিল। আমার অসম্ভব সুযোগ হয়েছিল তার সাথে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলার। উনি অসম্ভব মেধাবী ছিলেন। আমার যখন মন খারাপ থাকতো।তখন স্যার আমাকে অনুপ্রেরণা দিতেন, এগিয়ে যাওয়ার সাহস জোগাতেন।
ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা আখতার বলেন, আমরা যে শিক্ষকদের হারাচ্ছি তারা একেকজন দিকপাল ছিলেন। কেউ সমাজসেবক হিসেবে, কেউবা সমাজকর্মের চিন্তাবিদ হিসেবে। এই মানের শিক্ষক এখন নেই, আমরাও এই মানে নেই। হাকিম স্যার ছিলেন ব্যতিক্রমধর্মী। তার হাতের লেখা, বাচনভঙ্গি অনেক চমৎকার ছিল। তার প্রশ্ন দেখলে ওনার জ্ঞান ও গরিমা বোঝা যেতো। তার উপলব্ধি ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। যে কোনো সময় স্যারের কাছে গেলে তিনি হাসি দিয়ে গ্রহণ করে নিতেন।
অধ্যাপক হাকিমের পুত্রবধূ ডা. নুসরাত আহমেদ বলেন, তিনি আমাদের মাঝে একজন দিকপাল ছিলেন। তার কাজগুলো ছিল আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার। আমরা ওনার স্মৃতিতে সোহেল তাসনিম ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেছি। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছি।
তার সহধর্মিণী সুমি সরকার বলেন, আমাদের জীবনে তিনি ছিলেন একজন বন্ধু। তিনি কখনোই কোনো বড় কথা বলতেন না। বরং ছোট ছোট কাজে বিশ্বাস করতেন। তার বিশ্বাস ছিল সমাজকে বদলাতে হলে মানুষ হলে হবে না। আপনারা যদি নৈতিকতা ও গবেষণায় অটুট থাকেন তাহলে তার উত্তরাধিকার অটুট থাকবে। আমি সৌভাগ্যবান তার স্ত্রী হয়ে।
সভাপতির বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা বলেন, আমি সরাসরি স্যারের শিক্ষার্থী ছিলাম। স্যার একজন গুণী মানুষ ছিলেন। তার চলে যাওয়াটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। তার ক্লাসের ধরন ছিল একদম আলাদা ও উপভোগ্য। তিনি ছিলেন একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকার সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক। বার্ধক্যজনিত কারণে গত ১১ মে ইবির ১১তম উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৪৭ সালের ৪ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন অধ্যাপক সরকার।
মন্তব্য করুন