রাত পোহালেই বহুল প্রতীক্ষিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। নির্বাচনের আগের দিন থেকেই তাই পুরো ক্যাম্পাস নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) নির্বাচন উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ২ হাজার পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বসানো হয়েছে একাধিক চেকপোস্ট, বাড়ানো হয়েছে টহল ও নজরদারি। আরোপ করা হয়েছে বহিরাগত প্রবেশেও কড়াকড়ি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফটক, ছাত্রাবাস ও একাডেমিক ভবনের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দুই হাজার পুলিশ সদস্য পালাবদল করে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। ক্যাম্পাসে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে বহিরাগত প্রবেশ রোধে সর্বোচ্চ নজরদারি করা হচ্ছে। এখন আমরা সুষ্ঠু ভোটের অপেক্ষায় আছি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১২টায় রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত ছিল বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা কম। দুই-একজন প্রার্থীকে ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে এবং বিচরণ করতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর, কাজলাসহ বিভিন্ন ফটকে অবস্থান করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. গাজিউর রহমান বলেন, রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চভাবে প্রস্তুত। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তারা সদাপ্রস্তুত রয়েছে। দুই হাজার পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বৃহস্পতিবার রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রাকসু নির্বাচনে ১০টি প্যানেল ও বিভিন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। রাকসুর কেন্দ্রীয় ২৩টি পদে ৩০৫ জন, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন, প্রতিটি হল সংসদের ১৫টি করে পদে ১৭টি হলের মোট ২৫৫ টি পদের মোাট ৫৫৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
একজন ভোটার ৪৩টি পদে ভোট দিতে সময় পাবেন ১০ মিনিট। অর্থাৎ একজন ভোটার একটি ভোট দিতে প্রায় ১৪ সেকেন্ডে সময় পাবেন। রাকসুতে ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন ও এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন (৩৯.১ শতাংশ) ও ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৫ জন (৬০.৯ শতাংশ)।
মন্তব্য করুন