

আরবি ভাষাকে কেবল একটি ধর্মীয় ভাষা হিসেবে নয় বরং একটি কার্যকর পেশাগত দক্ষতা ও ইকোনমিক টুলস বা অর্থনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান বলেন। বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সচিব বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আরবি ভাষাকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক মাধ্যম হিসেবে দেখার সময় এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে এবং রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে এই ভাষার দক্ষতা অপরিসীম ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি জানান, দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আরবি ভাষা প্রসারে সরকার নিরলস কাজ করছে এবং মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়নে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মসজিদে খুতবা প্রদানের সময় আরবি অংশের পাশাপাশি এর অনুবাদ মুসল্লিদের সামনে তুলে ধরার পরামর্শ দেন সচিব। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আরবি শেখার আগ্রহ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এছাড়া টেলিভিশন ও রেডিওতে আরবি ভাষাভিত্তিক অনুষ্ঠান চালুর জন্য তিনি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম বলেন, আরবি ভাষার দক্ষতার মাধ্যমে দেশে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে সৌদি সরকারের অর্থায়নে ‘ইসলামিক অ্যারাবিক ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যগামী রেমিট্যান্স যোদ্ধারাও বিশেষভাবে উপকৃত হবে বলে জানান তিনি।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংক শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক আহমদ বলেন, বিশ্বে অন্তত দুই বিলিয়ন মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই ভাষার সাথে যুক্ত। ইংরেজি বৈশ্বিক ভাষা হলেও পবিত্র কোরআনের ভাষা হিসেবে আরবির মর্যাদা অতুলনীয় ও কিয়ামত পর্যন্ত এর চর্চা অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আরবি বই পাঠ ও ভাষা দক্ষতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী আটজন শিক্ষার্থী এবং দেশের সেরা ৯ জন আরবি শিক্ষককে পুরস্কৃত করা হয়।
এর আগে, দিবসটি উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন মাদরাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন