

থাইরয়েড সমস্যা অনেকের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণকে কঠিন করে তোলে। অনেকেই লক্ষ্য করেন যে, খাওয়া-দাওয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ওজন কমানো খুবই ধীরগতি হয়, বিশেষত পেটের চর্বি দ্রুত জমে। থাইরয়েডের কারণে বিপাকক্রিয়ার ধীরগতি এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা শরীরকে সহজে চর্বি জমানোর দিকে নিয়ে যায়। এতে কেবল স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, আত্মবিশ্বাসেও প্রভাব পড়তে পারে।
যদিও থাইরয়েড রোগীদের জন্য চরম ব্যায়াম করা সবসময় সম্ভব নয়, তবুও সঠিক খাদ্যাভ্যাস, হালকা দৈনন্দিন কার্যকলাপ এবং নিয়মিত জীবনধারা মেনে চললে পেটের চর্বি ধীরে ধীরে কমানো সম্ভব। ছোট ছোট পরিবর্তন, যেমন খাবারের ধরন, পানির পরিমাণ, ঘুমের মান এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, একসঙ্গে করলে বড় পরিবর্তন আনা যায়।
আরও পড়ুন : ভাত খেয়েও কি ওজন কমানো সম্ভব, জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ
আরও পড়ুন : ডিম কি হার্টের জন্য ক্ষতিকর
আজ আমরা সহজ ও কার্যকর টিপস জানবো, যা থাইরয়েড থাকলেও পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। এগুলো কঠিন নয়, আপনার দৈনন্দিন জীবনের সাথে সহজেই মানিয়ে নেওয়া যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। চলুন দেরি না করে জেনে নিই।
প্রোটিন দেহে দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, অতিরিক্ত খাওয়া কমায় এবং বিপাককে শক্তিশালী করে। প্রতিদিনের খাবারে ডিম, মাছ, মুরগি, ছোলা বা মটরশুঁটি এবং দই বা কম চর্বিযুক্ত দুধ রাখুন।
সাদা চাল বা রুটি দ্রুত রক্তে চিনি বাড়ায়, যা পেটের চর্বি জমায়। এর পরিবর্তে বাদামি চাল, ওটস, গমের রুটি ও বার্লি খেতে পারেন। এগুলো ফাইবারে সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে।
সোডা, প্যাকেটজাত জুস বা মিষ্টি খালি ক্যালোরি দেয়। তার বদলে বেছে নিন তাজা ফল, দই ও সাধারণ পানি।
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। খাবারের আগে পানি পান করলে ফোলাভাবও কমে এবং মেটাবলিজম ঠিক থাকে।
ফাইবারযুক্ত ও প্রদাহবিরোধী খাবার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। যেমন: পালং শাক, পাতা কচু, বিভিন্ন সবজি, বেরি ও মটরশুঁটি, মাছ, বাদাম এবং অলিভ অয়েল।
কম ঘুম ও মানসিক চাপ পেটে চর্বি জমায়। দিনে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমান। যোগব্যায়াম, ধ্যান বা গভীর শ্বাসচর্চা করুন এবং খাবারের ২০-৩০ মিনিট পর অল্প সময় হাঁটুন।
যদি জিমে যাওয়া বা কঠোর ব্যায়াম সম্ভব না হয় তবে, দৈনিক ২০-৩০ মিনিট হাঁটুন বা যোগ ব্যায়াম বা পিলাতেস। অথবা সাঁতার বা হালকা সাইকেলিংও করতে পারেন।
১৬ ঘণ্টা উপবাস, ৮ ঘণ্টা খাবার গ্রহণ। এটি ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে এবং ফ্যাট বার্নিং বাড়ায়। সকালে উঠে এক ঘণ্টা পরে খাবার খান।
কাঁচা বাঁধাকপি, ব্রকোলি, টোফু, সয়া দুধ (ওষুধের শোষণ বাধা দিতে পারে) এবং কফি, চা, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত ফাইবার (ওষুধের সঙ্গে একসঙ্গে খেলে এড়ানো ভালো) এড়িয়ে চলুন। তবে মনে রাখবেন, রান্না করা ব্রকোলি নিরাপদ।
আয়োডিন: আয়োডাইজড লবণ, মাছ
সেলেনিয়াম: ব্রাজিল বাদাম, বীজ, দই
জিঙ্ক: ডিমের কুসুম, সামুদ্রিক খাবার
টিএসএইচ, টি৩ ও টি৪ পরীক্ষা করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের ডোজ ঠিক রাখুন। সঠিক ডোজই ওজন নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।
আরও পড়ুন : বাঁধাকপি-ফুলকপি কি থাইরয়েডের জন্য সত্যিই ক্ষতিকর
আরও পড়ুন : ঘুমের মধ্যেও হতে পারে হার্ট ফেইলিওর
ধৈর্য্য ধরে নিয়মিত এই অভ্যাসগুলো মানলে, থাইরয়েড রোগীরাও ধীরে ধীরে সাপ্তাহিক ১-২ পাউন্ড ওজন কমাতে পারে। যদিও প্রক্রিয়াটি ধীর, কিন্তু এটি পুরোপুরি সম্ভব।
সূত্র : healthline media, apollo 247
মন্তব্য করুন