মরণোত্তর দেহদানকারী এবং দেহদানের অঙ্গীকারকারী ৩৯ ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)।
রোববার (১১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৩৯ জনের মধ্যে ৯ জন মরণোত্তর দেহদানকারী ও ৩০ জন দেহদানের অঙ্গীকারকারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগ এ সংবর্ধনা দেয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেহদান একটি মহৎ কাজ। একজন মানুষ দেহদান করে ৮ জন রোগীকে বাঁচাতে পারে। কয়েক মাস আগে সারাহ ইসলাম কিডনি ও কর্নিয়া দান করে গেছেন। সেই রোগীরা এখনো বেঁচে আছেন। এমন মহৎ কাজে যারা নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, যারা অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন এবং হচ্ছেন সত্যিই তাদের মৃত্যু নাই, তারা মরেও অমর, তাদের ক্ষয় নাই। যারা মরণোত্তর দেহ দান করেছেন বা করবেন অবশ্যই তাদের এই দান সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
তিনি বলেন, মরণোত্তর দেহদানে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ, আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। একইসঙ্গে ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদানের মাধ্যমে সফলভাবে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করায় দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে যোগ হয়েছে নতুন মাইলফলক।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া হবে এবং তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ফান্ড সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে, রোবটিক সার্জারি চালু করা হবে। রোগীদের জন্য প্রয়োজনে নতুন যা যা দরকার, তা নিশ্চিত করা হবে।
সংসদ সদস্য আরমা দত্ত বলেন, আমার মায়ের (মরণোত্তর দেহ দানকারী প্রীতিতি দেবী) মতো আমিও মরণোত্তর দেহ দানের অঙ্গীকার করছি। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের অনুষ্ঠান এই প্রথম ও বিরল। মরণোত্তর দেহ দানের মহৎ বিষয়টি যেমন গর্বের তেমনি একটি মহৎ স্থানে নিজেকে পৌঁছানোর বিরাট সুযোগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা সত্যিই প্রেরণাদায়ক ও এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে বিরাট অবদান রাখবে।
এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানুর সভাপতিত্বে সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আক্তার সুমি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে এনাটমি বিভাগের রেসিডেন্ট ছাত্রছাত্রীরা ‘আলো আমার আলো ওগো আলোয় ভুবন ভরা’ সংগীত পরিবেশন করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন