মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির নামে ৪০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ধামশি করপোরেশনের নোমান চৌধুরীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশান থানায় সিআইডির পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মিডিয়া জসিম উদ্দিন জানান মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে ২ বছরে ৩ হাজার ৭৮৭ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রতারণাপূর্বক অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেসহ পাচার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে মানিলন্ডারিংয়ের প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করা হয়েছে।
সিআইডি জানিয়েছে, অনুসন্ধানকালে জানা যায়, ধামশি করপোরেশনের নোমান চৌধুরীসহ অপরাপর অভিযুক্তরা মালয়েশিয়ায় পাঠানো প্রত্যেকের কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে।
অনুসন্ধানকালে আরও জানা যায়, আসামিরা ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ২ বছরে সর্বমোট ৩ হাজার ৭৮৭ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠায়। সরকারি ফি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও নূর আলীসহ সংশ্লিষ্ট অপরাপর অভিযুক্তরা জনপ্রতি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাসপোর্ট খরচ, কোভিড-১৯ টেস্ট, মেডিকেল ফি ও পোষাক সংক্রান্ত ফি এর নামে এসব অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্য পাওয়া যায়। সংঘবদ্ধ চক্রটির ১৪ সদস্য পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা করে সর্বমোট ৪০ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ৩৭০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। যা সুস্পষ্টভাবে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ অনুযায়ী মানিলন্ডারিং অপরাধ।
এ ছাড়াও মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, ইউনিক ইস্টার্নের নূর আলী, বিএম ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মো. সফিকুল ইসলাম বাসেক, নাতাসা ওভারসীসের মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, বিডি গ্লোবাল বিজনেসের মো. সোলায়মান, ইশা ইন্টারন্যাশনালের তাসলিমা আক্তার, এমইএফ গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের মো. মকবুল হোসাইন ওরফে মুকুল, কাশিপুর ওভারসিসের মো. রফিকুল হোসাইন, দরবার গ্লোবাল ওভারসীসের মো. মাহবুব মিয়া, আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মো. রুহুল আমিন, ধামশি করপোরেশনের মো. নোমান চৌধুরী, সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনালের মো. আবদুল হাই, ত্রিবেনী ইন্টারন্যাশনালের মুহা সাইফুল নূর, হাইদরী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সৈয়দ গোলাম সরোয়ার ও রমনা এয়ার ইন্টারন্যাশনালের মো. শহীদুল ইসলাম।
সিআইডি জানিয়েছে, বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ পরিচালনা করছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন