সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অপতৎপরতা এবং বাঙালি সংস্কৃতির উপর যে আঘাত তার বিরুদ্ধে আজকে আমাদের এই অবস্থান। ভয়ভীতি দেখিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের উদ্দেশে তাদের উচ্ছেদের রাজনীতিও রয়েছে। তারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন আরও জোরদার করে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় হাইকোর্টের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দূর্গোৎসবের প্রাক্কালে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখুন’ শ্লোগানের আলোকে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস, কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা এবং সমাজকল্যাণ সম্পাদক হুমায়রা খাতুন।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, এই দেশ বহু ধর্মের, বহু সংস্কৃতির ও বহু বৈচিত্র্যের। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বসবাস হওয়া সত্ত্বেও একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ধর্মভীরু মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে নেতিবাচকভাবে উসকে দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর তাদের উৎসবের সময় ও নির্বাচনের আগে পরে আক্রমণ ও হামলার ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এ সকল ঘটনায় তিনি সংগঠনের পক্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু হিসেবে একটি সংখ্যার মধ্যে ফেলে না দিয়ে বরং বহুত্ববাদকে ধারণ করতে হবে। শারদীয় উৎসবে যে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে রক্ষা করে মন্দিরের সকল অনাকাঙ্খিত হামলাকে প্রতিহত করে নির্বিঘ্নে উৎসব পালন করতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা বলেন, একই সাথে এ দেশের সকল জনগণ যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতে পারে সেবিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, দেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হলেও কিছু মানুষের ধর্মীয় আচরণে ভিন্নতা, ধর্মীয় উগ্রতা ও ধর্মের দোহাই দিয়ে শারদ উৎসবের সময় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পূজামণ্ডপে হামলা চালানো হয়, লুটপাট হয়। যার উদ্দেশ্য ধর্মীয় নয় বরং মন্দিরের সম্পদ লুটপাট করাই উদ্দেশ্য থাকে। এসব ঘৃণিত ও বিদ্বেষমূলক অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে যুক্ত করতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আন্দোলনকে জোরদার করতে এ দেশের প্রগতিশীল ও গণতন্ত্রকামী নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে দেশ থেকে ঘৃণা, বিদ্বেষ, ও হিংসার রাজনীতি দূর করতে, দুর্নীতি বন্ধে কালো টাকা ও পেশী শক্তিকে দমন করে আইন শাসন প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।
মন্তব্য করুন