জুলাই মাস আমাদের আমের মৌসুম হলেও দেশে এখন দুর্নীতি ফাঁসের মৌসুম চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠদের নাম প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে। আজিজ, বেনজীর, মতিউর, আবেদ আলীদের নাম গণমাধ্যমে ফাঁস হচ্ছে। কিন্তু এখনও রাঘব-বোয়ালদের নাম আসেনি। সরকারের মধ্যে এখনো হাজারও আজিজ-বেনজীর রয়ে গেছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী ভবন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য চলমান আন্দোলন আরও জোরদার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক চীন সফর প্রসঙ্গে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, চীন থেকে শূন্য হাতে তিনি দেশে ফিরেছেন। চীনের কাছে ২০ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিলেন, ১ বিলিয়ন ইয়ানের আশ্বাস পেয়েছেন। ২০ বিলিয়ন ডলার চেয়ে খালি ঝুড়ি নিয়ে ফেরত এসেছেন।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে কোটা বাদ দিলেন। শিক্ষার্থীরা কোটা বাদ নয়, সংস্কার চেয়েছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কোটা বাদ দিয়ে এখন ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে আবার কোটা বহাল করা হলো আদালতের মাধ্যমে। শেখ হাসিনার কথার বাইরে কেউ এক পা যেতে পারেন না। স্বাধীনতার পর যে দম্পতির বিয়ে হয়েছে তাদের সন্তান নাকি এখন মুক্তিযোদ্ধা! এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে চাকরি দিতেই আবারও কোটা বহাল করেছে সরকার। শুধু ছাত্রলীগকে চাকরি দিতেই তা করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। এখানে তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত আলেম-ওলামারা নেতৃত্বে রয়েছেন। আলেম-ওলামাদের বাদ দিয়ে কোনো ইতিহাস রচনা করা যাবে না। কিন্তু এই বর্তমান ডামি নির্বাচনের সরকার আলেম-ওলামাদেরও নিপীড়ন থেকে রেহাই দিচ্ছে না। যাদের এ সরকার সন্দেহ করে তাদের নামে বারবার মামলা দিচ্ছে। মামলা থেকে আলেম-ওলামারাও বাদ যায় না, মসজিদের ইমামরাও বাদ যায়নি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কেউ মোনাজাত করলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, কর্তৃত্ববাদী শাসন-শোষণের ফলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। দেশ রক্ষায় আমাদের নতুন করে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ সময় আগামীতে কঠিন, কঠোর কর্মসূচির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে ওলামা দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা আবুল হোসেনের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ টি এম আবদুল বারী ড্যানি, ওলামা দলের মাওলানা আলমগীর হোসেন, ক্বারী গোলাম মোস্তফা, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ নেতা।
মন্তব্য করুন