শেষ ১৩ ইনিংসে ছিল না কোনো উল্লেখযোগ্য স্কোর, সমালোচনার মাঝে চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু দাম্বুলার রাতটা বলল—লিটন দাস এখনও আছেন, নিজের মতো করেই আছেন।
পাল্লেকেল্লেতে ৬ রান। তার আগে পাকিস্তান সফরে পাঁচ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৮। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে শেষ তিন ইনিংসেও পানসে ব্যাটিং। ১২ ইনিংসে একটি হাফসেঞ্চুরিও নেই। বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে যেন ‘টিক’ শব্দটাই উঠছিল না।
কিন্তু ১৩ জুলাই দাম্বুলার আকাশে যখন টাইগার ব্যাটিংয়ের সূর্য অস্ত যাচ্ছিল, তখন একা দাঁড়িয়ে ছিলেন লিটন দাস। ধ্বংসস্তূপ থেকে দলকে টেনে তোলেন, খেলেন ৫০ বলে ৭৬ রানের এক অনবদ্য ইনিংস।
ব্যাট হাতে লিটনের এই ইনিংস ছিল শুধু স্কোরবোর্ড সাজানোর জন্য নয়—এটা ছিল আত্মবিশ্বাস ফেরানোর লড়াই, অধিনায়ক হিসেবে নিজের জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার লড়াই। ১৩ ম্যাচ পর ফিফটি পেলেন, পেলেন প্রতিপক্ষ বোলারদের চোখে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার সেই পুরনো ছায়া।
তার ইনিংসে ছিল ৫টি বিশাল ছক্কা, মাত্র ১টি চার। স্ট্রাইক রেট—১৫২! কেবল দায়িত্বশীল নয়, আগ্রাসী লিটনও ছিলেন সেখানে।
গত কিছুদিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিটন ছিলেন ‘ভাইরাল’, তবে ব্যাট হাতে ছিলেন নীরব। ব্যাটিং অর্ডারে নানা পরিবর্তন, দায়িত্বের চাপ, দলীয় ব্যর্থতা—সবই যেন চাপ দিচ্ছিল কাঁধে। কিন্তু দাম্বুলার উইকেটে, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির কঠিন পরিস্থিতিতে তিনিই দাঁড়িয়ে গেলেন ব্যাট হাতে।
৭ রানে ২ উইকেট হারানো দল, তখন ক্রিজে লিটন। তারপর—ধৈর্য, শট সিলেকশন, পরিস্থিতি মূল্যায়ন—সবকিছুর সমন্বয়ে টেনে নিলেন দলকে ১৫৫ রানের পর্যায়ে, যেখান থেকে বাংলাদেশ গড়তে পারে ১৭৭ রানের সংগ্রহ।
লিটনের এই ইনিংস বার্তা দেয় নির্বাচকদের—যে তিনি এখনও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলের সেরা ব্যাটারদের একজন। বার্তা দেয় দর্শকদের—বিশ্বাসটা হারাবেন না। আর বার্তা দেয় দলের ভিতরেও—লিটন যখন ফর্মে থাকেন, দলের রানে ঘাটতি থাকে না।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে। এই ইনিংস যদি হয় লিটনের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু, তাহলে বাংলাদেশ দলে নতুন করে প্রাণ ফিরতে পারে। নীরব থেকে কথা বললেন ব্যাট দিয়ে—লিটন দাস যেন আবার নিজের রূপে ফিরছেন!
মন্তব্য করুন