নারীদের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের শিরোপা লড়াইয়ে ফুটবল ভক্তরা পেলেন এক অনবদ্য নাটকীয়তার দৃশ্যপট। রোমাঞ্চকর এক ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করলে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। আর সেখানে স্পেনকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপের সেরা দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল ইংল্যান্ড।
বীরত্বের শেষ সাইনটা আঁকলেন ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ক্লোই কেলি—২০২২ সালের ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে জয়সূচক গোল দেওয়া এই ফরোয়ার্ড এবারও শিরোপা নির্ধারণী মুহূর্তে ইংল্যান্ডের শেষ স্পট কিকটি জালে পাঠিয়ে নিজেকে প্রমাণ করলেন বড় ম্যাচের নায়িকা হিসেবেই।
ম্যাচের ২৫তম মিনিটে স্পেন এগিয়ে যায় ওনা বাত্লের ক্রস থেকে মারিওনা কালদেনতের হেডে। কিছুটা এলোমেলো ইংলিশ রক্ষণ ব্যবস্থার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা পায় এই গোল। তার ওপর লরেন জেমসের গোড়ালির চোটে ইংল্যান্ড পড়ে চাপে। তবে বিরতির আগে ক্লোই কেলির বদলি হিসেবে মাঠে নামা হয় মোক্ষম সিদ্ধান্ত।
দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ায়। ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে ক্লোই কেলির ডান দিক থেকে বাড়ানো নিখুঁত ক্রসে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন অ্যালেসিয়া রুসো। এরপর স্পেন বলের দখল ও আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও গোলের দেখা পায়নি। ইংলিশ রক্ষণ ও গোলরক্ষক হান্নাহ হ্যাম্পটনের দৃঢ়তায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও দুই দল গোলের জন্য মরিয়া হলেও স্কোরলাইন আর বদলায়নি।
পেনাল্টি শুটআউটে প্রথমেই ইংল্যান্ড পিছিয়ে পড়ে, বেথ মিডের শট ঠেকিয়ে দেন স্পেনের গোলরক্ষক কাতা কোল। তবে এরপর হান্নাহ হ্যাম্পটন দারুণভাবে ফেরান কালদেনতে ও আইতানা বোনমাতির শট। যদিও ইংল্যান্ডের লিয়া উইলিয়ামসনের শটও ঠেকান কোল, কিন্তু স্পেনের সালমা পারালুয়েলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে সুবিধা পায় ইংল্যান্ড।
শেষ শটটি নিতে আসেন ক্লোই কেলি—তার চেনা স্টাইলে ছন্দে দৌড়ে এসে দুর্দান্ত শটে বল পাঠান জালে। মুহূর্তেই উল্লাসে ভাসে ইংলিশ শিবির, দ্বিতীয়বারের মতো ইউরো ট্রফি ঘরে তোলার আনন্দে।
নারী ইউরোর ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার, এবং ১৯৮৪ সালের পর প্রথমবার, ফাইনালের মীমাংসা হলো পেনাল্টি শুটআউটে। ফুটবলীয় মান, লড়াই আর নাটকীয়তায় ২০২৫-এর এই ফাইনাল নিঃসন্দেহে স্মরণীয় হয়ে থাকবে ইউরোপীয় ফুটবল ইতিহাসে।
মন্তব্য করুন