পাকিস্তানে করাচির লিয়ারি এলাকার পাঁচতলা একটি আবাসিক ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও একজন শিশু রয়েছে। সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৫ জুলাই) রাতে। রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করেই ভবনটি সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে, ফলে আশপাশের কিছু ভবনও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু করে পুলিশ, রেসকিউ ১১২২, রেঞ্জার্স ও অন্যান্য জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলো। ধ্বংসস্তূপ সরাতে ও জীবিতদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে ভারী যন্ত্রপাতি।
সূত্র বলছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করে। শনিবার আরও ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকটি মরদেহ উদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকাজুড়ে বাড়ছে শোক, উদ্বেগ এবং অপেক্ষার প্রহর। স্থানীয় বাসিন্দারা এখনো নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন ধ্বংসস্তূপের আশপাশে।
রেসকিউ ১১২২ সিন্ধুর অপারেশন ইনচার্জ জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত উদ্ধারকাজের প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো কেউ আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ শেষ হতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
করাচির দক্ষিণ অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার জাভেদ নবি জানিয়েছেন, ধসে পড়া ভবনটি তিন বছর আগে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল এবং দেড় মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নোটিশও জারি করা হয়েছিল। তিনি বলেন, যদিও ভবনটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল, তারপরও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা এই ভয়াবহ ট্র্যাজেডির কারণ হতে পারে।
তিনি আরও জানান, লিয়ারি এলাকায় এখনো ২২টি ভবন রয়েছে যেগুলো চরম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে ১৬টি ইতোমধ্যেই খালি করে ফেলা হয়েছে, এবং বাকি ভবনগুলো খালি করার প্রক্রিয়া চলছে।
ডেপুটি কমিশনার বলেন, পুরনো শহরাঞ্চলের সকল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। একই সঙ্গে করাচির অন্যান্য এলাকাতেও পুরনো ভবনের সার্বিক অবস্থা যাচাই করে বড় পরিসরে একটি কৌশল প্রণয়ন করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা আর না ঘটে।
মন্তব্য করুন