দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তানে নতুন করে ৬.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্স জানিয়েছে, গত রোববার যে অঞ্চলে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, সেখানেই আবার তৃতীয় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এতে দেশটিতে নিহতদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০০ জনে। খবর রয়টার্স
জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে বৃহস্পতিবার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে কেঁপে ওঠে পাকিস্তানের একাধিক অঞ্চল। যার মধ্যে রয়েছে ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বেশ কিছু এলাকা। পাকিস্তানের ভূতাত্ত্বিক দপ্তর (পিএমডি) জানিয়েছে, এখানে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যার উৎপত্তিস্থল ছিল হিন্দু কুশ রাজ্যে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১১ কিলোমিটার গভীরে।
আফগানিস্তানের নানগাহার প্রদেশের স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র নাকিবুল্লাহ রাহিমি বলেন, নতুন করে আঘাত হানা ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দুর্গম জেলা শিওয়াতে। যেটি পাকিস্তান সীমান্তের কাছে অবস্থিত। এ ছাড়া বারখাশকট এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতির খবর জানা গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত রোববার গভীর রাতে আফগানিস্তানের কুনার এবং নানগাহার প্রদেশে আঘাত হানা ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং ৩ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) গভীরে।
ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করছেন না। কারণ তাদের থাকার মতো কোনো জায়গা নেই। এ ছাড়া সাহায্যকারী সংস্থাগুলো অপর্যাপ্ত ত্রাণের বিষয়ে সতর্ক করেছে। জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো খাবার, ওষুধ এবং বাসস্থানের তীব্র সংকটের কথা জানিয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা বৃহস্পতিবার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে অনেকের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। তারা জানিয়েছে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষজন এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
এদিকে পূর্বাঞ্চলে এখনো উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। তালেবান প্রশাসন জানিয়েছে, নিহত বেড়ে ২ হাজার ২০৫ জনে দাঁড়িয়েছে এবং ৩ হাজার ৬৪০ জন আহত হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে গত রোববার কুনার এবং নানগাহার প্রদেশে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মঙ্গলবার দেশটিতে দ্বিতীয়বার ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে পাহাড় ধসের ফলে অনেক দুর্গম এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার আবারও ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
মন্তব্য করুন