পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে বন্যায় উদ্ধারকারী নৌকা ডুবে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনার পরও অধিকাংশ যাত্রীকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
পাঞ্জাব প্রদেশের ত্রাণ কমিশনার নবিল জাবেদ বলেন, রাভি, শতদ্রু এবং চেনাব নদীতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেওয়ায় প্রায় ৪ হাজার ১০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ২০ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ইতোমধ্যে ৪২৩টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫১২ জন চিকিৎসক এবং ৪৩২ জন স্বেচ্ছাসেবক ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষায় কাজ করছে। পাশাপাশি জীবিত প্রায় ১৫ লাখ গবাদিপশুকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যায় পাকিস্তানে এ পর্যন্ত ৯০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আলজাজিরার সাংবাদিক কামাল হায়দার পাকিস্তানের মুলতান থেকে বলেন, বন্যার কারণে ওই অঞ্চলের পুরো গ্রাম পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ মানুষ তাদের জিনিসপত্র ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছে। তবে অধিকাংশেরই কোনো নিরাপত্তা নেই। ১০ হাজার একর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া আমবাগানও ডুবে গেছে। হায়দার বলেন, সেপ্টেম্বরে বর্ষাকালে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দ্রুতই আবার ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হবে।
নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বর্ষা মৌসুমে চলতি বছর পাকিস্তানে ভয়াবহ বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশটির ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। মুষলধারে বৃষ্টি এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ বন্যাসহ দেশটির উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
১৫ কোটি মানুষের বসবাস পাঞ্জাব প্রদেশটি পাকিস্তানের কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এখান থেকেই বেশিরভাগ গম উৎপাদন করা হয়। এর আগে ২০২২ সালে পাকিস্তানের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সতর্ক করে বলেছিলেন, দেশ খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন