বিশ্বজুড়ে পশ্চিমাদের যে একক আধিপত্য, তার ইতি টানতে বদ্ধপরিকর চীন। এই কাজে দেশটির পাশে রয়েছে আরেক পরাশক্তি রাশিয়া। দেশ দুটির প্রেসিডেন্টের মধ্যেও রয়েছে দারুণ সখ্যতা।
ন্যাটোভুক্তিতে বাধা দিতে ইউক্রেনে হামলা চালায় মস্কো। এর জেরে নজিরবিহীন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত হচ্ছে পুতিনের দেশ।
শঙ্কা ছিল- নিষেধাজ্ঞার তলে চাপা পড়বে রাশিয়ার অর্থনীতি। কিন্তু ইরান, উত্তর কোরিয়া ও চীনের মতো দেশের কারণে নিষেধাজ্ঞা কাবু করতে পারেনি মস্কোকে। বরং যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়েছে।
সেই সম্পর্কের পার আরও চড়িয়ে দিতে এবার বন্ধু শি জিনপিংয়ের দেশে সফরে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে চীনে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুই দেশের পক্ষ থেকেই পুতিনের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দেন পুতিন। এর কয়েক দিন আগে বেইজিংয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
সেখানে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় তার। এরপর দুজন একসঙ্গে ঘোষণা দেন চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্ব থাকবে।
পুতিনের চীন সফরের ব্যাপারে রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন বলেছে, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে ভ্লাদিমির পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে ১৬ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত চীনে রাষ্ট্রীয় সফরে যাবেন।’
গেল ছয় মাসের মধ্যে পুতিনের এটি দ্বিতীয় চীন সফর হবে। ইউক্রেনে হামলার জেরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটির অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে চীন।
রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখায় চীন পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। যদিও এগুলো তারা উড়িয়ে দিয়েছে। তবে মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্কটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে পশ্চিমা দেশগুলো।
বর্তমানে চীনের অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা হলো রাশিয়া। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত বছর চীনে রাশিয়ার তেল রপ্তানির পরিমাণ ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং এক বিবৃতিতে বলেছেন, পুতিন এবং জিনপিং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবেন।
মন্তব্য করুন