রাশিয়ার মস্কোয় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত রুশ ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন ও সহপ্রতিষ্ঠাতা দিমিত্রি উটকিনকে আগেই সতর্ক করেছিলেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। এমনকি তাদের চোখ-কান খোলা রেখে চলার পরামর্শও দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র লুকাশেঙ্কো।
আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোজিন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ওয়াগনার সেনারা। এমনকি ইউক্রেনের বাখমুত শহর দখলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ওয়াগনার বাহিনী।
তবে রুশ সামরিক নেতাদের প্রতি অসন্তোষ থেকে গত ২৩ জুন বিদ্রোহের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। যদিও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় সেই বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন তিনি। এ বিদ্রোহের পর পুতিনের চক্ষুশূলে পরিণত হন প্রিগোজিন।
এ বিদ্রোহের দুই মাস পর গত বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে মস্কোর টিভের অঞ্চলে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিন ও দিমিত্রি উটকিনসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।
লুকাশেঙ্কো জানান, ওয়াগনারের বিদ্রোহের পর প্রিগোজিন ও তার সেনাদলকে যেন চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে না দেওয়া হয় সে ব্যাপারে পুতিনকে রাজি করিয়েছিলেন তিনি।
প্রিগোজিনের অন্তর্ধান নিয়ে লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘আমি দুবার তার প্রাণনাশের হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেছি। তিনি দুবার তা উড়িছে দিয়েছেন।’
তবে লুকাশেঙ্কো ঠিক কখন প্রিগোজিনকে সতর্ক করেছিলেন, তা বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বেল্টায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
শুধু লুকাশেঙ্কো নয়, এ ঘটনার অনেক আগে থেকেই প্রিগোজিনের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক করে আসছিলেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। অনেকটা রাখঢাক ছাড়াই প্রিগোজিনকে হত্যা করা হতে পারে বলে দাবি করেন বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
গত জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমি যদি প্রিগোজিন হতাম, তাহলে আমার খাওয়া-দাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকতাম। আমার খাবারে মেনু হিসেবে কী দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে নজরদাড়ি জারি রাখতাম।’
ওয়াগনারের ব্যর্থ বিদ্রোহের পর বাইডেনের সুরে প্রিগোজিনকে সতর্ক করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক বিল বার্নস এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
গত জুলাই বিল বার্নস বলেন, ‘আমরা যা দেখছি তা খুবই জটিল খেলা। পুতিন এমন একজন মানুষ যিনি মনে করেন প্রতিশোধই হলো সবচেয়ে ভালো কৌশল। আমার অভিজ্ঞতা বলে, পুতিন প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে। আর প্রিগোজিন যদি পুতিনের হাত থেকে রেহাই পেয়ে যান, তাহলে আমি অবাকই হবো।’
মন্তব্য করুন