রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সোচিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একটি তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। সেই জ্বলন্ত তেল শোধনাগারের সামনে টিকটক ভিডিও করায় দুই রুশ তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার হামলার জবাবে গত রোববার (১ আগস্ট) সকালে ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। হামলায় রাশিয়ার সোচিতে একটি তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লাগে। সেই জ্বলন্ত তেল শোধনাগারের সামনেইটিকটক ভিডিও বানান দুই তরুণী ও এক তরুণ।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তাতে দেখা যায়, জ্বলন্ত তেল শোধানাগার থেকে কালো ধোয়ার কুণ্ডলি আকাশে উঠে যাচ্ছে। আর এদিকে ওই দুই রুশ তরুণী একটি জনপ্রিয় রুশ র্যাপ গানের তালে তালে টিকটক ভিডিও করছেন। এ সময় তাদের পেছনে এক তরুণকেও দেখা যায়।
জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট এ ঘটনায় রুশ কর্মকর্তারা ভিডিওটিকে ‘অসংবেদনশীল ও অনুপযুক্ত’ বলে সমালোচনা করেন। রাশিয়ার সেফ ইন্টারনেট লীগের প্রধান ও ক্রেমলিনের নৈতিক অভিভাবক ইয়েকাতেরিনা মিজুলিনা ভিডিওটি শেয়ার করে বলেন, সোচিতে ড্রোন হামলার পর তারা ভিডিও ধারণ করছে। তারা কি বোঝে না যে, এটা বিপজ্জনক। কয়েক ঘণ্টা পর তাদের তিনজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুই তরুণীর একজন হলেন দারিয়া ভ্লাদিমিরোভনা লসকুটোভা (২০) এবং অপরজন হলেন কারিনা এভজেনিভনা ও শুরকোভা (১৯)। তবে, তরুণের পরিচয় জানানো হয়নি। তারা রাশিয়ার সভেরদলোভস্ক অঞ্চলের শিল্প নগরী নিঝনি তাগিলের বাসিন্দা। ঘটনার দিন তারা সোচি ভ্রমণে এসেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তারা যেটা করেছেন তার জন্য দোষ স্বীকার করেন। এরপর তাদের রাশিয়ার একটি আদালতে হাজির করা হয় এবং সেখানে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তারা বলেন, অমন পরিস্থিতিতে ভিডিওটি ধারণ করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পোস্ট করার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা কাউকে অপমান বা আঘাত করার উদ্দেশ্যে ভিডিওটি পোস্ট করিনি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, এই ধরনের ভুল আর হবে না। আমরা রুশ আইনের আওতায় যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত।’ ভিডিওটি ধারণের ঘটনায় ২০ বছর বয়সি তরুণী দারিয়া ভ্লাদিমিরোভনা লসকুটোভা জরুরি অবস্থার সময় জননিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার ৩০ হাজার পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। তবে, ইউক্রেন এই ঘটনার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী আক্রমণের সময় ধারাবাহিকভাবে রাশিয়ার জ্বালানি ও সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা করছে।
মন্তব্য করুন