ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি এবং জনতা দলের (সেক্যুলার) বহিষ্কৃত নেতা প্রজ্বল রেভান্নাকে ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার (৩ আগস্ট) বিচারক সন্তোষ গজানম ভাট এ রায় ঘোষণা করেন। খবর দ্য হিন্দুর।
প্রজ্বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কর্ণাটকের হাসান জেলার একটি খামারবাড়িতে কর্মরত এক নারী গৃহকর্মীকে জোরপূর্বক আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করেন। ভিকটিমকে ভয় দেখাতে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে রাখারও প্রমাণ পাওয়া যায়। শুক্রবার আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করার পর শনিবার শুনানিতে সাজা ঘোষণা করা হয়।
মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলামত ছিল একটি পেনড্রাইভ, যা লোকসভা নির্বাচনের মাত্র ছয় দিন আগে জনসমক্ষে আসে। ওই পেনড্রাইভে রেভান্নার যৌন নিপীড়নের একাধিক ভিডিও থাকার দাবি করা হয়। ভিডিওগুলো ভাইরাল হওয়ার পরই জেডিএস তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
রায় ঘোষণার আগে আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন প্রজ্বল। তিনি বলেন, আমার একমাত্র দোষ—আমি রাজনীতিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিলাম। সে কারণেই একটি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। কোনো নারী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ করেননি, তাদের দিয়ে জোর করে অভিযোগ করানো হয়েছে। তিনি আদালতের কাছে দয়া করে কম শাস্তির আবেদনও জানান।
তবে বিচারক তার দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। চার্জশিট, সাক্ষ্যপ্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে আদালত মত দেন, প্রজ্বল রেভান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং তার অপরাধ সমাজে ভীতিকর বার্তা দিচ্ছে। তাই তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
এই রায়ের পর কর্ণাটক রাজনীতিতে বড় ধরনের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়ে কীভাবে এতদিন এমন জঘন্য অপরাধ চাপা পড়ে ছিল? একই সঙ্গে এটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন, ন্যায়ের হাত থেকে কেউ রক্ষা পায় না।
মন্তব্য করুন