চীনে দেখা দিয়েছে নতুন ধরনের নিউমোনিয়া। ক্রমেই বাড়ছে এ নিউমোনিয়ার প্রকোপ। এবার সেই একই ধরনের নিউমোনিয়া হানা দিয়েছে ভারতে। এ রোগে আক্রান্ত বেশ কয়েকজনকে শনাক্তও করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের নিউমোনিয়া নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুই মাসে এ রোগের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। দেশটির বেশিরভাগ হাসপাতালে এ রোগীর চাপ বাড়ছে। এবার এ নিউমোনিয়ায় আক্রন্ত সাতজনকে ভারতেও শনাক্ত করা হয়েছে।
চীনে ছড়িয়ে পড়া নতুন এ ধরনের নিউমোনিয়ার নাম ওয়াকিং নিউমোনিয়া। মাইকোপ্লাজমার কারণ এ ধরনের নিউমোনিয়ার সংক্রমণ দেখা দেয়।
দিল্লি এমস জানিয়েছে, ভারতে আক্রান্ত সাত রোগীর শরীরে এ ব্যকটেরিয়ার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ রোগটি ভারতে নতুন নয়। আগেও এর প্রাদুর্ভাব ছিল। তবে করোনার পর এটি তেমন করে দেখা যায়নি।
ভারতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ৬১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এসব নমুনায় এ ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি। সবশেষ চীনে গত দুমাস ধরে এটির প্রভাব দেখা গিয়েছে। এরপর ভারতেও সাতজনের শরীরে আবার এটি সংক্রমিত হয়েছে।
এমসে জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। চীনের নিউমোনিয়ার সাথে এটির সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই বলেও মনে করছেন তারা। এটি আসলে ফুসফুসের এক ধরনের সংক্রমণ।
এ ধরনের নিউমোনিয়ার লক্ষণ হিসেবে বলা হয়েছে, সাধারণত আক্রান্ত শিশুদের জ্বর বা সর্দিকাশির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। তবে রোগে আক্রান্ত শিশুরা পুরোপুরি শয্যাশায়ীও হয় না। এজন্য এটিকে ওয়াকিং নিউমোনিয়া বলা হয়। তবে করোনার পর আবার বিষয়টি দেখা দেওয়ায় নজর রাখা হচ্ছে।
রোগটি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করেছে চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিশন জানিয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের দেহে নতুন ধরনের কোনো জীবাণু পাওয়া যায়নি, বরং মাইকোপ্লাজমা নামে এক ধরনের পরিচিত ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে।
মাইকোপ্লাজমা বেশ পরিচিত একটি ব্যাকটেরিয়া এবং এই ব্যাকটেরিয়া শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি- উভয়ের দেহেই সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। বয়স্কদের মধ্যে যারা এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের শিকার হন, তাদের মধ্যে ঠাণ্ডা, জ্বর, সর্দি ও মৃদু শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা যায় এবং সাধরণ ওষুধে কিংবা ওষুধ ছাড়াই এক বা দু’সপ্তাহের মধ্যে তা সেরে যায়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে তা খানিকটা ভিন্ন। কারণ, তাদের শ্বাসতন্ত্র বয়স্কদের মতো শক্তিশালী নয়।
হিন্দুস্তান টাইম জানায়, নিউমোনিয়ার প্রভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চীনের রাষ্ট্রচালিত গণমাধ্যম চায়না ন্যাশনাল রেডিও জানায়, বেইজিং শিশু হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার রোগী আসছে। এ ভাইরাসে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীদের ফুসফুসে প্রদাহ তীব্র জ্বর থাকলেও এখনো কাশির মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন