কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ
৭ অক্টোবর

নারকীয় হামলার দৃশ্যে থমকে গিয়েছিল বিশ্ব

ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা। ছবি : সংগৃহীত

আজ ৭ অক্টোবর। ২০২৩ সালের এ দিনে হঠাৎ একের পর এক নারকীয় হামলার দৃশ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যে হামলার দৃশ্যে হতবাক হয়ে যায় পুরো বিশ্ব। বেসমারিক নাগরিকদের ওপর হামলার জন্য যাদেরকে বিশ্ব মানবতার কাঠগড়ায় যুগ ‍যুগ ধরে দাড়াতে হচ্ছে তারাই হয়েছিল সেই হামলার শিকার। এরপরই শুরু হয় গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ। এ যুদ্ধের প্রথম বর্ষপূর্তি আজ।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার যে সূত্রপাত তা হয়েছিল এদিন। আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। নজিরবিহীন এ হামলায় গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা প্রায় ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে জিম্মি করে। এর জবাবে হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে তেল আবিব। তারা এমন প্রতিক্রিয়ার কথা জানায়, যাতে হামাস আর কোনো হুমকি সৃষ্টি করতে না পারে এবং ইসরায়েল যেন তাদের সব জিম্মিকে মুক্ত করতে পারে।

ওই হামলার পর প্রতিক্রিয়ায় নির্বিচার বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে গাজা উপত্যকাকে যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। অভিযান চালিয়ে হামাসের হাজারো যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে তারা। পাশাপাশি তাদের সুড়ঙ্গের বিশাল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন এক বছর পর বাস্তবে হামাসকে কতটা নির্মূল করা গেল?

কতজন হামাস নেতা নিহত হয়েছেন: ৭ অক্টোবেরর আগে গোষ্ঠীটির ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। এ এক বছরে বিভিন্ন হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া, হামাসের কেন্দ্রীয় জাবালিয়া ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ইব্রাহিম বিয়ারি, কমান্ডার সালেহ আল-আরৌরি, হামাসের ডেপুটি কমান্ডার মারওয়ান ইসা, মাস্টারমাইন্ড মোহাম্মদ দায়েফ, হামাসের সশস্ত্র শাখার শীর্ষ নেতা সাইদ আতাল্লাহ, গাজা উপত্যকায় হামাস সরকারের প্রধানমন্ত্রী রাওহি মুশতাহা, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর নিরাপত্তা দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সামেহ আল-সিরাজ ও কমান্ডার সামি ওউদেহর নিহত হওয়া তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েল। তবে সবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

ইসরায়েল এ পর্যন্ত ১১৩ জন হামাস নেতার নাম উল্লেখ করেছে, যাদের অধিকাংশই যুদ্ধের প্রথম তিন মাসে নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

জিম্মিদের উদ্ধার: ২৫৩ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। এর মধ্যে মৃতসহ দেড় শতাধিক ইসরায়েলিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া এখনও ৪০ জনের বেশিকে হদিস পাওয়া যায়নি।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।

ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে

গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে... দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’

বিধ্বস্ত চিকিৎসাব্যবস্থা : ইসরায়েলি হামলায় গাজার ৬৩ শতাংশ ভবন বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। উপত্যাকার ৩৮টি হাসপাতালের মধ্যে ২৩টিতে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। িএছাড়া বস্তচ্যুত হয়ে পড়েছেন ১৯ লাখ মানুষ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাত জাগার অভ্যাসে অজান্তেই যে ক্ষতি করছে, বিশেষজ্ঞের সতর্কবার্তা

ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল বন্ধ

রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির ৩৮ দফা দাবি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা / আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে সরকার

যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার পর জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরের মৃত্যু

নতুন ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে ৪০ হাজার মানুষকে খাওয়ানো হবে বিরিয়ানি

শিশু পুষ্টিতে শাকসবজির গুরুত্ব নিয়ে সায়েন্টিফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত

৮ দিন পর গুলিতে নিহত যুবকের মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ

ফ্যাসিস্ট পালালেও ফ্যাসিবাদের কালো ছায়া দেশ থেকে যায়নি : জামায়াত আমির

দীর্ঘদিনের কাশি? কখন ফুসফুস পরীক্ষা করাবেন জানুন

১০

শ্রমিকদের চা খেতে দেওয়া তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা

১১

নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে ‘জাতীয় সমাবেশ’, যা বললেন বক্তারা

১২

ভালোবাসার এক বছর 

১৩

নারায়ণগঞ্জে মার্কেটে আগুন, পুড়ে গেছে ৩০ দোকান

১৪

অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

১৫

শেখ হাসিনা যতদিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কিনা জানালেন জয়শঙ্কর

১৬

কিন্ডারগার্টেনের জন্য সরকারি নীতিমালার আশ্বাস আমিনুল হকের

১৭

শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৮

সিএমপি বন্দর থানার নতুন ওসি আব্দুর রহিম, বাকিরা যেখানে

১৯

তর্কে জড়ানো সেই চিকিৎসককে বহিষ্কারের নির্দেশ

২০
X