সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দুটি একই রকম ট্র্যাজেডির বিশ্বব্যাপী মিডিয়া কভারেজের তীব্র বৈপরীত্য নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক ইরানি। ইসরায়েলের বিয়ারশেবায় একটি হাসপাতালে বোমা হামলা দ্রুত এবং ব্যাপক আন্তর্জাতিক মনোযোগ পেয়েছে। এর তিন দিন আগে ইরানের কেরমানশাহে একটি হাসপাতালে হামলা হয়েছিল, যা মূলত উপেক্ষিত ছিল। খবর বিবিসির।
এর কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো, ইসরায়েল মিডিয়ার প্রবেশাধিকার দেয়। বিদেশি সাংবাদিকদের দ্রুত ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্মকর্তারা তাদের ব্রিফ করেন এবং তারা স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করতে পারেন। বিপরীতে ইরান সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেয়। দেশীয় মিডিয়ার ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করে এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সীমিত করে—ফলে শুধু নাগরিকদের তোলা ঝাপসা, অসমর্থিত ফুটেজ পাওয়া যায়।
ইসরায়েলে কর্মকর্তারা দ্রুত হতাহতের সংখ্যা এবং নিয়মিত আপডেট প্রকাশ করেছেন। ইরানে প্রথম ইসরায়েলি হামলার দুই দিন পর কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর সংখ্যা ২২৪ বলে প্রকাশ করে। কোনো স্থানভিত্তিক বিবরণ ছাড়াই তা প্রকাশ করা হয়। পরের দিন কেরমানশাহ হাসপাতালে হামলা হয়; কিন্তু কোনো বিস্তারিত আপডেট দেওয়া হয়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোরোকা হাসপাতাল কমপ্লেক্স পরিদর্শনের সময় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন। তার অবস্থানকালেও সাংবাদিকরা অবাধে ফুটেজ সংগ্রহ করতে পেরেছে।
অথচ কোনো মিডিয়া প্রবেশাধিকার বা স্বচ্ছতা না থাকায় ইরানের বর্ণনা হারিয়ে গেছে। শোকার্ত পরিবারগুলো অনলাইনে এই শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যক্তিগত পোস্টগুলো সমন্বিত সংবাদ কভারেজের বিকল্প হতে পারে না।
একটি যুদ্ধে জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া বিশ্বনেতাদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে। কেরমানশাহ নিয়ে নীরবতা দেখায় যে, কীভাবে সেন্সরশিপ এবং বিচ্ছিন্নতা সবচেয়ে বিধ্বংসী ট্র্যাজেডিকেও বিশ্বের দৃষ্টি থেকে মুছে ফেলতে পারে।
মন্তব্য করুন