খুলনায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বাদ জোহর কালেক্টরেট জামে মসজিদে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, সবার চেষ্টার ফলেই জুলাই আন্দোলন সফল হয়েছিল। এই আন্দোলনে দেশে অনেক লোক আহত-নিহত হয়েছিল। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বাদ দিয়ে সুবিধাবাদীদের নিয়ে দোয়া মাহফিল করার অভিযোগ উঠেছে। এতে মাহফিল চলাকালীন প্রতিবাদ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন নেতা। ক্ষোভ প্রকাশ করা ওই যুবকের নাম সাকিব রেজা। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত হয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের উদ্দেশে সাকিব রেজা বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে আহত হয়েছি। এখনো গায়ে গুলির দাগ রয়েছে। অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন। আন্দোলনের স্টেকহোল্ডার কি এই দুই-তিনজন ছিল? আপনি কাদের নিয়ে দোয়া মাহফিল করছেন? চোর-বাটপার নিয়ে দোয়া মাহফিল করছেন। যাদের নিয়ে বসে আছেন, তাদের আমরা আহতরা ঠিকভাবে চিনিই না। আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয়কদের বলেছেন?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর শাখার সদস্যসচিব জহুরুল তানভীর বলেন, ‘আমি দোয়া মাহফিলে ছিলাম না। ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি খুব পরিষ্কার যে, খুলনা জেলা প্রশাসক ও সুবিধাবাদী একটি মহল যোগসাজশে অনেক কিছুই করছেন। তা সবাই জানতে শুরু করেছেন।’
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা শাখার আহ্বায়ক তাসনিম আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা তার সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এই দোয়া মাহফিলে প্রকৃত জুলাইযোদ্ধারা কোথায়? আহতরা কোথায়? ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা কোথায়? যাদের নিয়ে দোয়া মাহফিল করা হয়েছে, তারা একাই কি খুলনাকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে?
দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- খুলনা পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, মহানগর জামায়তে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান, শহীদ সাকিব রায়হানের বাবা শেখ আজিজুর রহমান, মহানগরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক আল-শাহরিয়ার, এনসিপির প্রতিনিধি আহমেদ হামীম রাহাত প্রমুখ।
মন্তব্য করুন