নির্বাচন শেষে হয়েছে। কিন্তু ধোঁয়াশা কাটেনি। অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সরকার গঠন নিয়ে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় শুরু হয়েছে দলগুলোর দর কষাকষি।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) জোট সরকার গঠনের আলোচনা হলেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দল দুটি।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) পিপিপি ও পিএমএল-এনের নেতারা রাজধানী ইসলামাবাদে বৈঠকে বসছেন।
অন্যদিকে, আলোচনায় রয়েছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি ইমরান খানও। তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থীরাও সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে আলোচনার মূলে রয়েছে। তাদের অন্য দল থেকে ডাকা হচ্ছে। যা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পিটিআই।
ইতোমধ্যে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী অন্তত ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এনে যোগ দিয়েছেন বলে সোমবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে পিটিআইয়ের সমর্থন নিয়ে লাহোরের একটি আসন থেকে জয়ী শহটির সাবেক ডেপুটি মেয়র ওয়াসিম কাদির রোববার প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নওয়াজের দলে যোগ দেন।
এরপরে স্বতন্ত্র হিসেবে পিএমএল-এনে যোগ দিয়েছেন নির্বাচনে জয়ী রাজা খুররাম নওয়াজ, ব্যারিস্টার আকেল, পীর জহুর হুসেইন কুরেশি, সরদার শমসের মাজারি ও ব্যারিস্টার মিয়া খান বুগতি। তবে তারা পিটিআই সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থী কি না তা দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন জানায়নি।
নির্বাচনের আগে পিটিআইয়ের নিবন্ধন বাতিল করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল আসনে জয় পেয়েছেন দলটির সমর্থিত প্রার্থীরা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, ফল প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে কোনো নিবন্ধিত দলে যোগদান অথবা সংসদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে থাকতে পারবেন তারা।
কিন্তু জোট সরকার গঠন করা নিয়ে পিএমএল-এন ও পিপিপির মাঝে এখনো সমঝোতা না হওয়ায় পিটিআই-সমর্থিত অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দলে ভেড়ানোর জন্য যোগাযোগ শুরু করেছে পিএমএল-এন।
এ ছাড়া প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৫৪টি আসনে জয় পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। করাচিভিত্তিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) ১৭টি আসন জিতেছে।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য কোনো দল বা জোটকে ১৩৪টি আসন পেতে হবে। একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি আসনের ভোট বাতিল করা হয়েছে এবং পাঞ্জাবের অন্য একটি আসনের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো জোট গঠনে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
মন্তব্য করুন