খালেদা জিয়ার ‘মাতৃস্নেহ’ নিয়ে অধ্যাপক জাহিদের স্মৃতিচারণা
‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন, আমরা যারা উনার সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে…আমরা দেখেছি, উনি একদিকে যেমন সত্যি সত্যি অভিভাবক, আরেক দিকে উনি আমাদের মাতস্নেহে দেখতেন। কোনো দিন বাসায় যাওয়ার পরে কোনো কিছু না খেয়ে বাসা থেকে কেউ যেতে পারত না।’
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কাযালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এভাবে স্মরণ করলেন বিএনপি চেয়ারপারসনকে।
জাহিদ বলেন, ‘ডাক্তারদের কী খাইয়েছেন, এগুলো সব সময় উনার যারা কাজের সহকর্মী ছিল, সহায়তা করত তাদের জিজ্ঞাসা করত। উনি বলে দিতেন, “আজকে এটা দিবা।”’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো দিন (চিকিৎসক) যেতে একটু দেরি হলে জিজ্ঞাসা করতেন, “এত দেরি কেন হলো? আমি তো বসে আছি।”’
‘অর্থাৎ চিকিৎসকরা কখন যাবেন…উনি যখন বাসায় থাকতেন, তখন প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার বাসায় যেতেন। উনি সবাইর সাথে কথা বলতেন।’
দোয়া চেয়ে অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কাজেই আমি আজকে এইদিনে বলব, চলেন, আমরা সবাই আল্লাহ রাব্বলু আলামিনের কাছে উনাকে বেহেস্ত নসিব করুন, সেই দোয়া করি। জাতীয়তাবাদী দলের সকল নেতা-কর্মীকে এই শোক সহ্য করার এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই কষ্ট সহ্য করে দায়িত্ব পালন করার আল্লাহ তওফিক দিন।’
আপনার সাথে কবে শেষ কথা হয়েছিল, এমনটা জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘পয়লা ডিসেম্বরে তার ডায়োলাইসিস স্টার্ট করা হয়েছে…তার পরিবরির্ততে ইলেকটিভ ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছে। তারপরও উনার সাথে আমাদের(চিকিৎসকদের) কথা হয়েছে।’
‘আমরা যখন উনাকে দেখেছি, উনি আমাদের কথার জবাব দেওয়া চেষ্টা করেছেন এবং রেসপন্স দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কাজেই রোগী হিসেবে উনি যেহেতু অসুস্থ…আমরা সব সময় উনার সাথে কথা বলা ঠিক না, শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে…কোনো অবস্থাতেই উনার রোগ বেড়ে যাক, এই ধরনের কোনো আচরণ কোনো চিকিৎসক করে না। কাজেই কবে কথা হয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে এখন বলার মতো আমার মানসিক অবস্থায় এই মুহূর্তে নেই।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘উনি সব সময় আমরা যখন দেখতে যেতাম…শি ওয়াজ রেন্সপন্ডিং। উনাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হতো বা কথা বলার জন্য বলা হতো অথবা উনাকে প্রশ্ন করা হতো, প্রত্যেকটিরই উনি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতেন।’
দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান বিএনপি চেয়ারপারসন। তার মত্যুতে বিএনপি ইতোমধ্যে সাত দিনের শোক ঘোষণা করেছে। দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো উত্তোলন থাকবে সাত দিন।
১ ঘণ্টা আগে