রংপুরের বদরগঞ্জ শহরে একটি দোকানঘর নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত শফিকুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার মারা গেছেন। বাবা হত্যার বিচার দাবিতে শহীদ মিনারে জড়ো হন সন্তানরা।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে বদরগঞ্জ শহীদ মিনারে মরদেহ আনা হয়। এ সময় তার সন্তানরা তার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
নিহত শফিকুল ইসলামের বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ি গ্রামে। সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত না থাকলেও তিনি বিএনপির সমর্থক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জ শহরে একটি দোকানঘর নিয়ে বিরোধের জেরে কালুপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের লোকদের হামলার শিকার হন শফিকুল ও স্থানীয় বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান লাভলু। গুরুতর আহত অবস্থায় শফিকুলকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় দুটি পৃথক মামলায় কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও মূল অভিযুক্ত মানিক, তার ছেলে তমাল ও কয়েকজন অভিযুক্ত উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসেন।
শনিবার শহীদ মিনারে নিহত শফিকুলের মেয়ে মিম আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মানিক চেয়ারম্যান, তার ছেলে তমাল ও তাদের সঙ্গীরা দিন-দুপুরে কুপিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আজকে হত্যাকারীরা বাইরে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিসের জন্য। আমরা তাহলে সাধারণ মানুষ কি বিচার পাব না।’ আর নিহত শফিকুলের ছেলে মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই। একটাই দাবি ফাঁসি। আমাদের আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই।’
শহীদ মিনারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন- নিহত শফিকুল ইসলামের ভাই শফিয়ার রহমান, নিহত বিএনপি নেতা লাভলু মিয়ার ছেলে রায়হান কবির, রংপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক, উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি আবু জর গিফারি মন্টু এবং পৌর যুবদলের বহিষ্কৃত ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব।’
মন্তব্য করুন