মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একটি অজগর একে একে ছয়টি ছাগল গিলে খাওয়ার পর গ্রামবাসী সেটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, একটি অজগর সাপকে হত্যার পর সেটিকে ঘিরে স্থানীয় লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন। পাশে একটি মৃত ছাগল পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সবার হাতে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে বোবরথল (করইছড়া) গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে একে একে ৫-৬টি ছাগল নিখোঁজ হয়। এলাকার লোকজন শুরুতে ধারণা করেছিলেন ছাগলগুলো হয়তো চুরি হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন দেখতে পান একটি বিশাল আকৃতির অজগর সাপ একটি ছাগল গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।
দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, শুনেছি বোবরথল (করইছড়া) গ্রামের লোকজনদের কয়েকটি ছাগল খেয়ে ফেলে অজগরটি। ঘটনার সময় একটি ছাগল খাচ্ছিল সাপটি, তা দেখে স্থানীয় লোকজন অজগর সাপটিকে মেরে ফেলেছে।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী সাঈব আহমদ ইয়াসের বলেন, বন্যপ্রাণী পরিবেশের অংশ, তারা আমাদের শত্রু নয়। একটি ছাগল খাওয়াকে কেন্দ্র করে অজগরের মতো একটি সাপকে পিটিয়ে মারা সত্যিই দুঃখজনক। এটি শুধু অমানবিক নয়, আইনগতভাবেও অপরাধ। এ ঘটনা প্রমাণ করে- আমাদের এখনো বন্যপ্রাণী সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতনতা নেই।
তিনি বলেন, বনবিভাগের উচিত দুর্গম এলাকায় নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে মানুষকে বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন করা। অন্যথায় এ ধরনের ঘটনা থামানো সম্ভব হবে না।
বনবিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. রেজাউল মৃধা বলেন, ঘটনাটি শুনে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানানো হয়েছে। তারা ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন