সাইনবোর্ডে ডজনখানিক চিকিৎসকের নাম থাকলেও হাসপাতালে নিয়মিত বসেন মাত্র একজন। তাও দেখা মেলিনি সেই চিকিৎসকের। তিনি পূজার ছুটিতে আছেন। তাই আল্ট্রা সহযোগী এবং ল্যাব টেকনিশিয়ান দিয়ে চলছে হাসপাতাল।
এ চিত্র টাঙ্গাইলে ফেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালের।
সরেজমিনে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দেখা যায় একজন ম্যানেজার তার কাউন্টারে বসে রয়েছে, একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান তার প্যাথলেজি বিভাগে বসে রয়েছে অপর দুজনের মধ্যে একজন আলট্রা রুমে বসে কাজ করছে এক নারী সহযোগী।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে দুটি সরকারি হাসপাতালকে ঘিরে অসংখ্য অবৈধ ক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এতে বেশিরভাগই নেই প্রয়োজনীয় অনুমোদন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে পাওয়া যায়, জেলায় ৫৬০টি বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৫১টি অননুমোদিত রয়েছে। তারমধ্যে ফেয়ার হসপিটাল রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, সরকারি দুটি হাসপাতালের পাশ দিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক ও হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। অথচ সরকারি হাসপাতালের চেয়ে ভালো মানের চিকিৎসা কোনো বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে নেই।
ফেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ও সার্জন ডাক্তার চৈতি তালুকদার বলেন, ফেয়ার হাসপাতালে আমি নিয়মিত বসি। বর্তমানে পূজার ছুটিতে আছি।
ফেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক আশীষ কুমার মালাকার বলেন, আমাদের ক্লিনিকে অনেকগুলা শেয়ার হোল্ডার। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ-বিএনপি জামাতসহ বেশ কিছু লোকজন নিয়েই এ ক্লিনিকটি পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ড রয়েছে। যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ডধারিরা বেশ কিছু সুবিধা পাবে। এরমধ্যে প্যাথলজি, এক্সরে, আল্ট্রাসহ অন্যান্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ছাড় পাবে। এনজিও সদস্যরা এ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘টাঙ্গাইলে বড় দুটি সরকারি হাসপাতাল। একটি ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট অপরটি ২৫০শয্যা বিশিষ্ট। তার চারপাশেই হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়গনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে পাশে ক্লিনিক গড়ে তোলে যেন ব্যাবসায় ভাল করা যায়। অর্থাৎ রোগী বেশি পাওয়া।’
এছাড়া তিনি বলেন, ‘কখনোই একজন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চলতে পারে না। শুধুমাত্র দুজন সহযোগী নারী কর্মী দিয়ে যে হাসপাতাল চলে সেই ব্যাপারে আমি দ্রুত আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করছি।’
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. ফরাজী মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘জেলায় যতগুলো বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক রয়েছে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের কতজন ডাক্তার নার্স এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা সেটি ভালো করে খতিয়ে দেখছি। এরপর সে সমস্ত হাসপাতালগুলোকে যথাযথ আইনের আওতায় আনা হবে।’
মন্তব্য করুন