

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ হাসান বিপ্লবের বাসায় ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া বাড়িতে ককটেল হামলাও চালানো হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বাড়িতে এমন তাণ্ডব চলে।
খালেদ হাসান বিপ্লবের বাড়ি রাজশাহী নগরের মতিহার থানার কাজলা নতুন বৌ বাজার এলাকায়। হামলার সময় তার বাবা হেলাল উদ্দিনকে (৬২) একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। আর মা খালেদা বেগমকে (৫৩) হাতুড়িপেটা করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করছেন।
খালেদ হাসান বিপ্লব গত বছরের ৫ আগস্ট থেকেই বাড়িতে নেই। তাকে খুঁজতে গিয়ে চালানো এ হামলায় বাড়িতে থাকা ৩টি মোটরসাইকেল, টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসিসসহ বাড়ির সব আসবাবপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে প্রায় ১০০-১৫০ জন ব্যক্তি তাদের বাড়িতে আসেন। তখন বাইরে মূল ফটকে তালা দেওয়া থাকায় তারা ঢুকতে পারছিলেন না। পরে ৩০-৪০ জন ব্যক্তি প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকেন। পরে ভবনের সিঁড়ির পাশের আরেকটি গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। দোতলায় উঠে তারা খালেদ হাসান বিপ্লবকে খুঁজতে থাকেন।
তাকে না পেয়ে বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাঁধা দিতে গেলে খালেদের মা খালেদা বেগমকে হাতুড়িপেটা করা হয়। একপর্যায়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। খালেদের মা তখন কয়েকজনের পা ধরে পড়ে যান। পরে আগুন না দিয়ে ওই ব্যক্তিরা ফিরে যান। তবে নামার সময় নিচতলায় থাকা ৩টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে যান তারা। এছাড়া তখন বাড়িটি লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
পরিবারের সদস্যরা ঘটনার পর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশের টহল দলের তিনজন সদস্য রাতেই বাড়িটি দেখে যান। তারা খালেদা বেগমকে আগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে হাসপাতালে যেতে পারেননি খালেদা বেগম।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা খালিদ হাসান বিপ্লব বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই আমি দেশের বাইরে। মুখোশ পরে একদল লোক আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে সব তছনছ করে দিয়েছে। আমার বৃদ্ধ মায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে। আতঙ্কে চিকিৎসা নিতেও অপারগতা প্রকাশ করছে। ট্রমা কাটলে হয়তো তিনি চিকিৎসা নিতে পারবেন।
একটি সূত্র বলছে, প্রায় মাসখানেক আগে ‘জয়যাত্রা’ নামের একটি গণমাধ্যমে ভিডিও সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন যুবলীগ নেতা খালিদ হাসান বিপ্লব। সেখানে ৫ আগস্টের পর তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং তার বৃদ্ধ বাবা-মাকে গালমন্দ-হেনস্তা করার অভিযোগ করেছিলেন। ওই সূত্রটি বলছে, ৫ আগস্ট এর পর যুবলীগের ওই নেতার বাড়িতে কোনো হামলা, ভাঙচুর কিংবা অন্যকোনো ঘটনাই ঘটেনি। ‘জয়যাত্রা’ গণমাধ্যমে অসত্য তথ্য দেওয়ার কারণেই মূলত তার বাসায় এমন হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে সূত্রটি মনে করছেন।
জানতে চাইলে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমি রাতে থানায় ছিলাম না। ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগও করেনি।’
মন্তব্য করুন