নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৯ পিএম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

নোয়াখালীতে ভয়ংকর রাসেল ভাইপার, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নোয়াখালীর হাতিয়ায় রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মিলেছে। পুরোনো ছবি
নোয়াখালীর হাতিয়ায় রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মিলেছে। পুরোনো ছবি

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া উপজেলায় ভূমিহীন বাজারের পাশে ধান ক্ষেতে ভয়ংকর বিষধর রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মিলেছে। তবে স্থানীয়রা প্রথমে এটিকে অজগর সাপ মনে করলেও বন বিভাগের কর্মকর্তারা পরে সাপটিকে রাসেল ভাইপার বলে শনাক্ত করেন।

উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বর্তমানে সাপটিকে বনবিভাগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ভেনম রিসার্চ সেন্টারে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলার নদীপাড় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নোয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, সুবর্ণচর উপজেলায় ভূমিহীন বাজারের পাশে ধানক্ষেতে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মেলে। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী ইউনিটের সদস্যরা ৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধার করেন। ধারণা করা হয়, পানির সঙ্গে মেঘনা নদী দিয়ে থেকে সুবর্ণচর উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকায় এ সাপ নেমে এসেছে।

রাসেল ভাইপার সম্পর্কে তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক এবং বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, রাসেলস ভাইপার (Russell's Viper) সাপটি ‘চন্দ্রবোড়া’ বা ‘উলুবোড়া’ নামেও পরিচিত। আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এটি ইঁদুর ও টিকিটিকি খায়। ফসলের ক্ষেত ও বসতবাড়ির আশেপাশে প্রাণীদুটির প্রাচুর্যতা বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষকে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কখনও কখনও আক্রমণও করে।

জোহরা মিলা বলেন, পদ্মার চরাঞ্চল, নদী অববাহিকা ও বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু ঘাস বা ফসলের জমিতে এই সাপটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত জুন-জুলাই মাসে এর প্রজননকাল। সাপটি ডিম দেওয়ার বদলে সরাসরি ৬-৬৩টি বাচ্চা প্রসব করে। দেখতে মোটা, লম্বায় ২ থেকে ৩ ফুট দৈর্ঘ বিশিষ্ট এই সাপের গায়ে ছোপ-ছোপ গোলাকার কালো দাগ থাকে। ঘন ঘন জিহ্বা বের করে হিসহিস শব্দ করে। সাপটি সম্পর্কে যার ধারণা নেই তিনি এটিকে অজগর ভেবেই ভুল করবেন।

জোহরা মিলা বলেন, এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পঁচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী সাপটি সংরক্ষিত।

এটি দুর্লভ প্রজাতির একটি সাপ। পূর্বে শুধু বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে এ সাপ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এরা পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা ও চরগুলোতেও বিস্তার লাভ করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাই ছিল দেশকে স্বৈরতন্ত্র মুক্ত করা : ইসলামী আন্দোলন

নবজাতকের মৃত্যু, সেই বন্ধন হাসপাতালের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রে ইরানিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

আ.লীগের সুরেই কথা বলছে বিএনপি : ফয়জুল করীম

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ / ঢাকা তাঁতীদল সভাপতির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি 

‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন না করলে ইরানও করবে না’

মেসির এবারের জন্মদিন যে কারণে আলাদা

‘কিছু হলেই আসিফ মাহমুদকে দায় দিয়ে দাও’

অবশেষে কমলো স্বর্ণের দাম

১০

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ট্রাম্প

১১

ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় ঢামেক শিক্ষার্থীরা

১২

ইরানে ভয়ের বাতাস : আসছে কি নতুন দমন-পীড়ন?

১৩

ইউপি সচিবের কাণ্ডে সরকারি চাল পাচ্ছেন না সুবিধাভোগীরা

১৪

সেই ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইলেন বেরোবি শিক্ষক মাহমুদুল হক

১৫

ইরানে আবারও বিস্ফোরণ

১৬

ক্লিপবোর্ড কিনে না দেওয়া স্কুলছাত্রের কাণ্ড

১৭

তেলের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই : জ্বালানি উপদেষ্টা 

১৮

‘প্রয়োজনে আমাকে ধরে নিয়ে বুকে গুলি চালায় দেন’

১৯

ন্যাটোর মুখোশ ফাঁস হলো ট্রাম্পের স্ক্রিনশটে

২০
X