সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের চৌবাড়ীতে কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে পাশের গ্রামের বখাটে সুমনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোববার (২ জুলাই) রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন বখাটে সুমন ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এর আগে ১ জুলাই রাতে উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের চৌবাড়ী পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
সুমন উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের চৌবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। সে পেশায় একজন ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি।
মামলার এজাহার ও ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, স্কুল থেকে ফেরার পথে প্রায় সময়ই নির্যাতিত ওই স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও নানা কুপ্রস্তাব দিত প্রতিবেশী সুমন। ওই ছাত্রীর পরিবার থেকে একাধিকবার নিষেধ করার পরও সুমন তাকে উত্ত্যক্ত করতেই থাকে। মানসম্মানের ভয়ে বিষয়টি আর কাউকে না জানিয়ে পরিবার নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমায় ওই ছাত্রীর পরিবার। তাতেও দমেনি বখাটে সুমন। ঢাকায় গিয়েও সে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। সেখানে স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ঈদুল আজহায় ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার বাড়িতে ঈদ করতে আসলে ১ জুলাই রাতে জানালা ভেঙে স্কুলছাত্রীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে সুমন। এ সময় স্কুলছাত্রীর চিৎকারে পাশের ঘর থেকে তার বাবা-মা এলে সুমন জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সকালে বিষয়টি সুমনের বাড়িতে তার পরিবারকে জানাতে গেলে স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে সুমন এবং তার পরিবারের সদস্যরা। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বাড়ি ফেরে নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলছাত্রী।
এ বিষয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত সুমনের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেশীরা জানান, সুমনের ঘটনায় পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে তারা ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়েছে।
কামারখন্দ থানার ওসি নুরনবী প্রধান জানান, ওই স্কুলছাত্রীর বাবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে স্কুলছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। ভিকটিম স্কুলছাত্রীর ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য বুধবার (৫ জুলাই) সিরাজগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত সুমনসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
মন্তব্য করুন