প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা লন্ডভন্ড হয়েছে। সোমবার (২৭ মে) মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার ঝাউকান্দা এলাকার দুটি ঘর ভেঙে গেছে। সদরপুর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নে ৮-৯টি কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ঝড়ে আর কোনো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
গাছপালা ও গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় জেলার বেশ কিছু মহাসড়কে যান চলাচলে বাধাগ্রস্ত হলেও অনেক গ্রামীণ সড়কের অবস্থা বেহাল। সদরপুর উপজেলার চর নাসিরপুরে ৪-৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনের তারের ওপর গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে, খুঁটি হেলে পড়ে, ট্রান্সমিটার বিকলসহ বিভিন্ন স্থানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুর সদরের বিদ্যুৎ চালু করা গেলেও অন্যান্য উপজেলায় প্রায় ২৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়েছে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যার মধ্যে রয়েছে ৮টি উপজেলার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
আলফাভাঙ্গা উপজেলার অদর মিয়া কালবেলাকে বলেন, শুনেছি বিদ্যুতের লাইনে সমস্যা। ঝড়ের জন্য ২৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকার পাশাপাশি মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও মাঝেমধ্যে সমস্যা করছে। কারো সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছি না।
নগরকান্দা থেকে আবুল হাসনাত কালবেলাকে বলেন, আমাদের পাশাপাশি সালথা নগরকান্দায় ঝড় শুরু হওয়ার পর থেকেই সারা দিন সারা রাত বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এতে নানান সমস্যা হচ্ছে।
বোয়ালমারী উপজেলার রাতুল খান কালবেলাকে বলেন, আমাদের উপজেলার বেশকিছু এলাকায় গাছপালার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ভাঙ্গা থেকে সাইফুল্লাহ শামীম জানান, দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় হাসপাতালে আসা রোগীরা সমস্যায় আছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহাম্মদ বাবর কালবেলাকে বলেন, এই মুহূর্তে তেমন কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা সব জায়গায় খোঁজ রাখার চেষ্টা করছি। ঘূর্ণিঝড়ে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা নিরূপণ করে দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার কালবেলাকে বলেন, ফরিদপুরে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। চরভদ্রাসনে দুটি বাড়ি ও কিছু জায়গায় গাছপালা উপড়ে পড়া ও ডালপালা ভেঙে যাওয়াত কথা শুনেছি। এ ছাড়াও কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। সেখানে অতিদ্রুত বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন