ভুল চিকিৎসায় রাজধানীর ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী মাহবুবা রহমান আঁখির সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মৃত্যুশয্যায় রয়েছে আঁখি। মর্মান্তিক এ ঘটনার বর্ণনা করে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ দাবি করেন। আঁখিকে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার প্রতিবাদে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
এ সময় ইয়াকুব আলী সুমন বলেন, আমার সিদ্ধান্ত ছাড়াই আমার স্ত্রীকে তারা লেবার ওয়ার্ডে নিয়ে যায়। ডা. সংযুক্তা সাহার নির্দেশে আমার স্ত্রী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। না হলে আমি এখানে ভর্তি করতাম না। আমি বারবার বলেছি হাসপাতালে সংযুক্তা সাহা আছে কি না। তারা বারবার বলেছে ডাক্তার আছে কিন্তু তিনি ছিলেন না তিনি বিদেশে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে আমার সন্তানকে মেরে ফেলা হয়েছে। ভুল চিকিৎসা করে স্ত্রীকে মৃত্যুশয্যায় পাঠানো হয়েছে। আপনারা আমাকেও মেরে ফেলুন। আমি কাকে নিয়ে বাঁচব? এই হত্যার সঙ্গে সবাই জড়িত। তারা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মানববন্ধনে আঁখির একজন সহপাঠী বলেন, স্বামী-সন্তান নিয়ে আঁখির এখন আনন্দে থাকার কথা ছিল। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় বড় ধরনের খেসারত দিতে হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি। আঁখির সুচিকিৎসার পূর্ণ দায়িত্ব সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা ‘সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার বিচার চাই’, ‘নবজাতক হত্যার বিচার চাই’, চিকিৎসার নামে অর্থ-বাণিজ্য, অবহেলা বন্ধ হোকসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া এ সময় তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— ডাক্তারের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে, ভুল চিকিৎসায় ভুক্তভোগী ইডেন কলেজ শিক্ষার্থী নবজাতকের মা মাহবুবা রহমান আঁখির সব চিকিৎসার খরচ সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে বহন করতে হবে এবং ক্ষতি নিরূপণ করে পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহার নরমাল ডেলিভারিসংক্রান্ত ভিডিও ও পরামর্শ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার কাছে নরমাল ডেলিভারি করাতে চেয়েছিলেন শিক্ষার্থী মাহবুবা রহমান আঁখি। গত শুক্রবার প্রসব ব্যথা ওঠায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় মাহবুবা রহমান আঁখিকে। তখন ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না, তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। এ ঘটনায় ‘ভুল’ চিকিৎসায় জন্মের সময়ই মারা গেছে নবজাতক আর আঁখি এখন মৃত্যুশয্যায়।
মন্তব্য করুন