বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সংযুক্ত করে দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা দুই শিক্ষার্থী অনশন ভেঙেছেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান।
অনশন ভাঙা শিক্ষার্থীরা হলেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শিবলি সাদিক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান।
অনশন প্রত্যাহারকারী শিক্ষার্থী শিবলী সাদিক বলেন, যেহেতু দাবি মানতে ভিসি স্যারের পক্ষ থেকে ১০ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে এবং তিনি লিখিত দিয়েছেন। এজন্য অনশন ভাঙছি। তবে ১০ দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে আবারও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, আমি ২০২৩ সাল থেকে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু আমি তো এখানে রাজনৈতিক পরিচয় আসিনি; বরং ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনের শামিল হয়েছি।
আরেক শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, অনশনে থেকে ক্লাস পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছি। ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য অনশন করেছি। উপাচার্যের পক্ষ থেকে ১০ দিনের যে সময় চাওয়া হয়েছে, তা আমাদের কাছে আশাব্যঞ্জক মনে হয়েছে। এজন্য আপাতত আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।
এদিকে অনশন চালিয়ে যাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। তাদের দাবি, ১০ দিনের সময়সীমা কেবল আশ্বাস। আইনে সংশোধনের গেজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন।
সোমবার রাত ১২টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর গেটে অনশনস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে রাত ১১টার দিকে কায়সার আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অনশনকারী শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বলেন, আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের দাবি আদায় করেই অনশন ভাঙব।
এর আগে এদিন বিকেলে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী। এ সময় তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র ও সংবিধি প্রণয়নের কাজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে করার আশ্বাস দিয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আমি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করব। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এ ছাত্র সংসদ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করব। অক্টোবরের পরে সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের যে দাবি ও প্রত্যাশা তা পূরণ করব।
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তার আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
মন্তব্য করুন