কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় রাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ড. মুছা

ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া। ছবি : সংগৃহীত
ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের তরুণ গবেষক ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ারের তথ্যভান্ডার অনুযায়ী শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

ড. মুছা গবেষণা যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০১৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনার সময়। এ সময় তিনি গবেষণার প্রাথমিক দীক্ষা নেন ড. মো. রোকনুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে। পরে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তিনি কাজ করেন ড. মো. খায়দেমুল ইসলাম মোল্লার অধীনে এবং গবেষণার নানা বিষয়ে আলোচনা ও দিকনির্দেশনা পান ড. মো. রবিউল ইসলামের কাছ থেকে।

তার গবেষণা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল ২০১৭ সালে জাপানের শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত IAA কনফারেন্সে অংশগ্রহণ। ড. মুছা পরবর্তী সময়ে জাপানের ইউনিভার্সিটি অব আইজু থেকে প্রফেসর জংপিল শিনের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

তিনি ৩ বছর ৬ মাস বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (BAUST) শিক্ষকতা করেছেন। পরে ২০২৫ সালের ১২ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নিজ ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক হিসেবে যোগদন করেছেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষা ছুটিতে ইউনিভার্সিটি অব আইজুতে পোস্টডক্টরাল গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আছেন। তার গবেষণার অর্থায়ন করছে জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের MEXT স্কলারশিপ এবং ইউনিভার্সিটি অব আইজুর Public University Corporation।

তিনি শিক্ষাজীবনে দাখিল সম্পন্ন করেছেন রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার জাফরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবং আলিম সম্পন্ন করেছেন রংপুরের ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মোকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসা থেকে।

ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া তার এই অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তার শিক্ষক, সহকর্মী, গবেষণা সহযোগী ও পরিবারের প্রতি। তিনি বলেন, এটি আমার জীবনের একটি বড় অর্জন। আমি চাই, ভবিষ্যতেও গবেষণার মাধ্যমে সমাজ ও বিশ্বের কল্যাণে অবদান রাখতে।

ড. আবু সালেহ মুছা মিয়ার বাবা হাফেজ ক্বারি মো. আব্দুস সামাদ বলেন, মুছা অত্যন্ত সহজ-সরল ছেলে। শুরুতে ভাবতেই পারিনি, সে এতদূর যেতে পারবে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ারের তথ্যভান্ডারে প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকদের তালিকায় আমার ছেলের নাম এসেছে। এতে আমি, আমার পরিবার, এলাকাবাসী ও উপজেলাবাসী গর্বিত আলহামদুলিল্লাহ। আমি চাই, তার মেধা দেশের মানুষের কল্যাণে আজীবন কাজে লাগুক।

প্রথম গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ড. আবু সালেহ মুছা মিয়ার এ অর্জনে স্বাভাবিকভাবেই আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা চাই আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে নাম কুড়িয়ে এগিয়ে যাক। আমরা যে সীমিত সুযোগ-সুবিধা দিতে পেরেছি, সেই সামান্য সুবিধা নিয়েই তারা গবেষণার কাজ করেছে। সেই সুযোগ-সুবিধা থেকেও যদি আমরা একজন ভালো শিক্ষার্থী তৈরি করতে পারি, সেটাই আমাদের বড় পাওয়া। তাদের এই অর্জন বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। তারা বিভাগের সুনাম ছড়িয়ে দিতে পারবে।

ইউনিভার্সিটি অব আইজুর প্রফেসর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রখ্যাত গবেষক প্রফেসর জংপিল শিন তার প্রাক্তন পিএইচডি শিক্ষার্থী ড. আবু সালেহ মুছা মিয়ার সাফল্যের প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের ল্যাবরেটরিতে মূলত প্যাটার্ন রিকগনিশন নিয়ে কাজ করি, বিশেষ করে মানব ক্রিয়াকলাপ শনাক্তকরণ এবং তা পারকিনসন ও আলঝেইমারের মতো রোগে প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিই। আমার প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে পোস্টডক্টরাল গবেষক ড. আবু সালেহ মুছা মিয়া অসাধারণ নিষ্ঠা ও গবেষণা প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় (এলসেভিয়ার ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক যাচাইকৃত) তার নাম উঠে আসা নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয় এবং তার অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি।

তিনি বলেন, আমরা একসঙ্গে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস (নেচার), আইইইই অ্যাক্সেসসহ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে গবেষণা প্রকাশ করেছি এবং আইইইই, স্প্রিঙ্গার ও এসিএম আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনগুলোতেও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছি। আমি বিশ্বাস করি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে তার গবেষণা ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে ২৮ শতাংশ’

মানব পাচারকারী চক্রের আস্তানা থেকে নারী-শিশুসহ ৮৪ জন উদ্ধার

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে জার্মানিও, কিন্তু...

‘দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু এখন আর চিনতে পারছি না’

বিসিবি সভাপতির চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত

রাকসু নির্বাচনের তারিখ নিয়ে অনড় ছাত্রশিবির

এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছে ফ্রান্স

এনসিপি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগসহ নিবন্ধন পাচ্ছে ৬ দল

ব্যালন ডি’অর আজ, জেনে নিন কখন- কীভাবে দেখবেন

বিএনপির উদার দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল বাংলাদেশ অর্জনে সহায়ক : মঈন খান

১০

বিএনপি সমালোচনার রাজনীতি বিশ্বাস করে না : জুয়েল

১১

প্রধান শিক্ষক নেই নারায়ণগঞ্জের ৩৭৩ সরকারি প্রাথমিক স্কুলে

১২

চট্টগ্রামে পাহাড় থেকে ৬ সন্ত্রাসী আটক

১৩

নির্বাচনে ‘আওয়ামী দোসর’ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা যাবে না : ফারুক

১৪

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ৩০

১৫

যেসব কারণে রাগ নিয়ন্ত্রণ জরুরি

১৬

মালয়েশিয়ায় গেলেন সেনাপ্রধান

১৭

পূজার পর রাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রদল, কী বলছে ছাত্রশিবির

১৮

জবিতে ৩৩টি পানির ফিল্টার স্থাপন করল ছাত্রশিবির

১৯

রাতের ৩ কাজেই চুল ঝরা বন্ধ হবে!

২০
X